তিনি আরো বলেন, বখাটে আহসান প্রায় সময় আমাকে উত্ত্যক্ত করতো। কু-প্রস্তাবও দিয়েছে। কিন্তু মেয়ে বলে সামাজিক লজ্জার ভয়ে সয়ে গেছি। অনেক সময় কিছু বলিনি বাবা-মাকে। কারণ তারা টেনশন করবে। শেষমেশ আর থাকতে না পেরে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। এলাকার অনেকেই তার আচরণ সম্পর্কে জানতো। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি।
চোখের জল ফেলতে ফেলতে স্কুল শিক্ষিকা মিসফা সুলতানা বলেন, বখাটের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে বহুবার স্কুল ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলাম। ঘটনার দিন দুপুরে তাই এই খবর পাওয়ার পর সে ক্লাস চলাকালীন শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে। তারপর মাটি খোঁড়ার লোহার তৈরি খুন্তি দিয়ে আমার পায়ে আঘাত করে। এতে আমি মাটিতে পড়ে যাই। তারপর বেধড়ক হাত-পা-শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে।
তিনি আরো বলেন, পূর্ব ডেঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিগত ২০১১ সাল থেকে আমি সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছি। খুব কষ্ট করে চাকরিটা পেয়েছি নিজের মেধা দিয়ে। দারিদ্র্য আমাকে কাবু করতে পারেনি। কিন্তু পেশির জোরে আজ আমি হেরে গেলাম। মিসফা বলেন, এর আগে গত বুধবার বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছিল বখাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। এতে বখাটে আরো ক্ষিপ্ত হয়। রাস্তায় আমাকে বলেছিল দেখে নেবে। কঠিন শাস্তি দেবে।
তিনি আরো বলেন, ওই বখাটে মাদকাসক্ত। ঘটনার পর তাকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে পরে তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক রসিক চাকমা বলেন, মেয়েটির হাত-পা ভেঙ্গে গেছে। দাঁড়াতে পারছে না। আসলে আঘাত গুরুতর। মেয়েটি আগের অবস্থানে ফিরতে বেশ সময় লাগবে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। এদিকে খুন্তি দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষিকার হাত-পা ভেঙে দেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বখাটে আহসান গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn