খুলনা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফুলতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দিন মিঠু (৪২) ও তার এক দেহরক্ষীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আহত হয়েছেন মিঠুর শ্বশুর ও অপর এক দেহরক্ষী। বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় খুলনার ফুলতলার নতুনহাটে নিজ বাসভবন সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিঠুর দেহরক্ষী সিরাজ ও শ্বশুর সৈয়দ ফজলুল আলম সেলিমের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয়রা জানান, খুলনার প্রভাবশালী বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন মিঠু ‘মেসার্স মিঠু এন্টারপ্রাইজ’ নামে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে অন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে ডিবি পুলিশের পোশাক ও হেলমেট পরা কয়েকজন দুর্বৃত্ত ডিবি পরিচয়ে নিরাপত্তা প্রহরীকে ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে। কক্ষের গেটে থাকা লাইসেন্স করা শর্টগানধারী তার দেহরক্ষী নওশের আলীকে (৫০) গুলি করে দ্রুত ভেতরে ঢুকে পড়ে তারা। এরপর মিঠুর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মিঠুর শ্বশুর ও উপজেলা বিএনপি নেতা সৈয়দ ফজলুল আলম সেলিম (৫৬) ও অপর দেহরক্ষী সিরাজ মোড়ল (৫১) আহত হন। হত্যাকাণ্ডের পর খুনিরা বীরদর্পে এলাকা ত্যাগ করে। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় নওশের আলীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ১টার দিকে নওশের আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউল্লাহ জানান, ৫ জন দুর্বৃত্ত ওই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তারা দুটি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে যায়। সবার মাথায় ছিল হেলমেট। দুজন মিঠুর অফিসে প্রবেশ করে মাথায় খুব কাছ থেকে গুলি চালায়। পরে মোটরসাইকেলে দ্রুত সটকে পড়ে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আলাউদ্দিন মিঠুকে এর আগেও কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। ফুলতলা এলাকায় এ যাবৎ যত রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে, তাতে চরমপন্থীদের ভাড়া করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও তেমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। জানা যায়, আলাউদ্দিন মিঠুর বাবা আবুল কাশেম দামোদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৯৮ সালের ১৮ আগস্ট দুপুরে ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই আবু সাঈদ বাদল ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাকেও ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে খুলনা-যশোর মহাসড়কে ছবেদাতলা নামক স্থানে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে।