বার্তা ডেক্সঃঃটাঙ্গাইলের ঘাটাইলে চোর অপবাদ দিয়ে এক আদিবাসী নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদি হয়ে ঘাটাইল থানায় একটি মামলা করেছেন। সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় ঘাটাইল থানার এসআই জাকির হোসেন এ তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকাল রোববার (১০ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত নারী ঘাটাইলের সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামের নারায়ন বর্মনের স্ত্রী। মামলা সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ‌্যা রানীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তার ছোট ছেলে পলাশ (৮) একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার পরিবারের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে খেলাধূলা করত। ঘটনার ১৫ দিন আগে মনিরুল ভূঁইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য কাগজ নিয়ে আসে পলাশ। ঘুড়ি বানানোর পর মনিরুলের সন্তানদের সঙ্গে ঘুড়িও ওড়ায়।

হঠাৎ মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকাসহ জমির মূল্যবান কাগজপত্র চুরি যায়। এ ঘটনার জের ধরে ৩ জানুয়ারি (রোববার) শিশু পলাশকে তারা বাড়ি ধরে নিয়ে মারধর করে। মালামাল চুরি করে পলাশ তার মায়ের কাছে জমা দিয়েছে বলে জোর করে স্বীকারোক্তিও আদায় করে। গতকাল রোববার (১০ জানুয়ারি) মনিরুলের দুই বোন খুকি (৩৭) ও সুমি আক্তার (৩২) সন্ধ‌্যা রানীর বাড়ি যান। চোর অপবাদ দিয়ে সন্ধ‌্যা রানীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। তারা সন্ধ‌্যা রানীকে করিম ভূঁইয়ার আকাশমনি গাছের বাগানে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এসময় মনিরুল ভূঁইয়া, তার দুই ছেলে, ও দুই বোন মিলে সন্ধ‌্যা রানীকে লাঠি দিয়ে ব‌্যাপক মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। ওই রাতেই নির্যাতিত নারী বাদি হয়ে পাঁচ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযুক্ত আসামি মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করেছে সন্ধ‌্যা রানীর ছেলে পলাশ। চুরি করা গহনা সে তার মায়ের কাছে জমা দিয়েছে। বারবার চাইলেও তারা গহনা ফেরত দেয়নি। তাই আমার ছোট বোন সুমি সন্ধ‌্যা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। আমরা কিছু জানি না।’ প্রত্যক্ষদর্শী মহানন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ‌্যা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা যাবৎ গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় সন্ধ‌্যা রানীকে। এসময় তার ৬ মাসের শিশুকে বুকের দুধ খেতে দেওয়া হয়নি। পরে দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সন্ধ‌্যা রানীকে উদ্ধার করি। বর্তমানে সে আমার বাড়িতেই আছে।’ ঘাটাইল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn