গুগলের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক মামলা আমেরিকায়
গুগলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলো আমেরিকায়। অভিযোগ অন্যায়ভাবে বাজারে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে তারা। গুগলের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক মামলা হলো আমেরিকায়। গুগল বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে এবং অন্যায়ভাবে বাজারে নিজেদের একাধিপত্য তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ১৯৯৮ সালে মাইক্রোসফটের পরে কোনো টেক জায়েন্টের বিরুদ্ধে এত বড় মামলা আমেরিকায় হয়নি। অভিযোগ অস্বীকার করে মঙ্গলবারই টুইট করেছে গুগলও। অ্যালফাবেট আইএনসি, এই সংস্থার ছাতার তলাতেই একাধিক কোম্পানি রয়েছে। গুগল., ইউটিউব, ক্রোম ইত্যাদি। সরাসরি অ্যালফাবেট আইএনসি-র বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে। আমেরিকার বিচার বিভাগ বা ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস এবং ১১টি রাজ্য একত্রে গুগলের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করেছে।
তাদের অভিযোগ, সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বিজ্ঞাপন পায় গুগল। সেই টাকা দেওয়া হয় বিভিন্ন ফোন কোম্পানিকে। যাতে ফোনগুলির ডিফল্ট সেটিংসে গুগলকে সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে রাখা হয়। বস্তুত, অ্যানড্রয়েডও অ্যালফাবেট আইএসসি-র প্রোডাক্ট। ফলে অ্যানড্রয়েড ফোনে গুগল, ইউটিউব, ক্রোম ডিফল্ট হিসেবে থাকে। সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল ৯০ শতাংশ বাজার ধরে রেখেছে। অন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলি তাদের ধারে কাছেও আসতে পারে না। মামলাকারীদের অভিযোগ ঠিক সেখানেই। তাদের বক্তব্য, অন্যায় এবং বেআইনিভাবে গুগল বাজারে একাই রাজত্ব করছে। কোনো প্রতিযোগিতার আবহই তৈরি করতে দিচ্ছে না। মামলাকারীদের এই অভিযোগ অবশ্য সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে গুগল। মামলা হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই টুইট করে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট করে দেয় তারা।
আমেরিকার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ রসেন রিপোর্টারদের বলেছেন, “গুগল যেভাবে বাজারে একাধিপত্য তৈরি করেছে, তাতে প্রতিযোগিতার কোনো জায়গাই নেই। এটা হতে দেওয়া যায় না।” এর আগে আমেরিকাতেই মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলাই হয়েছিল। বস্তুত, সেই মামলার পরে নেট দুনিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছিল। খুলে গিয়েছিল বাজার। প্রচুর সংস্থা ব্যবসায় নেমে পড়ে। সে কারণেই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে ওই মামলাটিকে মাইলস্টোন হিসেবে দেখা হয়। গুগলের বিরুদ্ধে এই মামলাও কি নেট দুনিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারবে? বিশেষজ্ঞরা এখনই সে বিষয়ে যথেষ্ট নিশ্চিত নন। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৯৮ সালের বাজার আর ২০২০ সালের বাজার এক নয়। গুগল যে সাম্রাজ্য তৈরি করেছে, তা ভাঙা মুশকিল। বস্তুত, মানুষও গুগলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনের প্রতি নতুন করে মানুষের বিশ্বাস গড়ে তোলা খুব সহজ হবে না বলেই তাঁরা মনে করছেন। সূত্র: ডয়েচে ভেলে।