গ্রেনেড হামলা মামলা: তারেক ও বাবরে’র মৃত্যুদণ্ড দাবি
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৪৯ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনগত বিষয়ে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করে এ শাস্তি দাবি করেন। গত ২৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ২৪৫ জনের সাক্ষ্য পর্যবেক্ষণের আলোকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছিল। আজ ১ জানুয়ারি (২০১৮) আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক এবং রাষ্ট্রপক্ষে আইনগত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামিপক্ষ সময় চেয়ে আবেদন করায় আদালত তা মঞ্জুর করে আগামীকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। রাষ্ট্রপক্ষর আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এ তথ্য জানিয়েছেন।
২১ আগস্টের নৃশংস হামলায় পৃথক দুটি মামলায় মোট আসামি ৫২ জন। মামলার আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন। এ মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদাবক্স চৌধুরী, লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক এবং মামলার সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা—সিআইডি’র সাবেক এসপি রুহুল আমিন, সিআইডি’র সাবেক এএসপি আতিকুর রহমান ও আবদুর রশিদসহ মোট ৮ জন জামিনে রয়েছেন। তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মেজর জেনারেল (এলপিআর) এটিএম আমিন, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দারসহ ১৮ জন এখনও পলাতক। এছাড়া ৩ জন আসামি জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুফতি হান্নান ও শরীফ সাইদুল আলম বিপুলের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।