তাহিরপুর উপজেলার জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন সীমান্ত এলাকাসহ ৭টি ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রামের মানুষ। এ সকল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন হাওর পারের শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষজন। এই অবস্থায় তাদের মধ্যে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই। এদিকে তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেই এসময় সর্দি-জ্বর বেড়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তবে করোনা মহামারির এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা দিক না কেন, অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এদিকে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবনে কিছুটা উন্নতি হলেও পুরোপুরি সুস্থ হননি কেউ। দুর্বল শরীরে জ্বর নিয়েও অনেকে বাজারঘাটসহ জনসমাগমের এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টিকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা।
জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয় থাকলেও ঝামেলা ও বিড়ম্বনার ভয়ে করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা। তাই রোগীরা দ্বারস্থ হচ্ছেন স্থানীয় বাজারের পল্লী চিকিৎসকদের। তাদের অনেকেই পল্লী চিকিৎসকের দেয়া ঔষধে ভাল হচ্ছেন বলে হাসপাতালের দ্বারস্থ হচ্ছে না। আবার অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালে বহির্বিভাগ। এদিকে বাজারের ফার্মেসিগুলোতেও কদর বেড়েছে বিভিন্ন কোম্পানির প্যারাসিটামল জাতীয় নাপা, নাপা-এক্সটা, হিস্টামিন ও দামী অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের। ফলে তাদের ব্যবসাও বেশ জমজমাট। অনেকেই আবার হাসপাতালে যেতে চাইলেও লকডাউনের কারণে যেতে পারছেন না।
বিভিন্ন বাজারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঔষধের দোকানীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন বলে অনেকেই ঔষধ নিচ্ছেন। অনেককে নরমাল ঔষধ দিয়েছেন কিন্তু না কমার দামী অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ দিয়েছেন। এতে করে বেচা-কেনাও বেশ ভাল হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রোগী বলেন, হাসপাতালে গেলেই করোনা টেস্ট দিবে। তাই ভয়েই যাই না। এজন্য কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক কাছ থেকে ঔষধ এনে খাচ্ছি। দেখি কি হয়। অনেকেরই কমছে। না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নেব।
তাহিরপুর উপজেলার চার থেকে পাঁচটি ওষুধের দোকানের বিক্রেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়। তারা জানান, সর্দি-কাশি-জ্বরের ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বেড়ে গেছে। যা অবস্থা, তাতে মনে হয় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। এ ধরনের বেশির ভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে তাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, বর্তমান সময়ে এলাকায় সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এর থেকে মুক্তি পেতে ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে বেশিরভাগ ফার্মেসীতে গিয়ে সমস্যার কথা বলে ঔষধ কিনে নিচ্ছে। ফলে সর্দি, কাশি ও জ্বর সংশ্লিষ্ট ঔষধের চাহিদা বেড়েছে। এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির বলেন, এই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখা হবে এবং অসুস্থদের করোনা টেস্টের আওতায় আনতে উৎসাহিত করে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সৈয়দ আবু আহমদ শাফী জানান, করোনার ভয়ে অনেকেই নমুনা দিচ্ছে না। দিলে করোনারভাইরাসে আক্রান্তের পরিমাণ আরও বাড়বে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১১৯ বার