চাট্টগ্রাম হাসপাতালে সুইপারই চিকিৎসক!
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসকের কাজ করেন সুইপার। এর পাশাপাশি অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে চলে তার জমজমাট ‘ইটের’ ব্যবসা। এসব ইট দিয়ে রোগীদের ভাঙা হাতে-পায়ে কাস্ট (প্লাস্টার ব্যান্ডেজ) দেওয়া হয়। জানা গেছে, তপন দাশ নামের এক সুইপার করেন চিকিৎসকের কাজ। হাসপাতালের ওটির সামনে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ইকবাল হোসেনের কক্ষ থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালের একটি কক্ষে রোগী অপেক্ষা করে, অন্যটিতে নার্সিং কলেজে অধ্যয়নরত দুই ছাত্রী এবং এক ইন্টার্ন নার্স (ছাত্রী) সহযোগিতায় সুইপার তপন দাশ তাঁকে কাস্ট দেন। এ বিষয়ে ওয়ার্ডে ৮৫ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি থেকে আসা দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র রমজান আলীর মা জাহেদা বেগম জানান, তার ছেলে ২৮ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। বাড়িতে গাছ থেকে লিচু পাড়ার সময় পড়ে বাঁ পা ভেঙে গেছে। এখান থেকে তো প্যারাসিটামল ও দু-একটা কম দামি ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ পাচ্ছি না। গত ২৮ দিনে ২২-২৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। টানা দেওয়া ইট বাবদ ১০০ টাকা নিয়েছে একজন।
ওই ওয়ার্ডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নার্স জানান, অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ১১০টি শয্যা আছে। রোগী আছে ২১০ জন। মাঝেমধ্যে ২৫০-এর বেশি রোগী থাকে। এদিকে দীর্ঘদিন কাজ করা কয়েক চিকিৎসক ও নার্স বলেন, অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ‘ইটের’ ব্যবসা জমজমাট। যখন এই ওয়ার্ডটি হয়েছিল তারও আগের (অন্য ওয়ার্ডে ছিল অর্থোপেডিক রোগী) অনেক ইট রয়েছে। রোগীর ওজন অনুসারে ইটের পরিমাণ নির্ভর করে। শিশুদের পায়ের একটি করে ইট। প্রাপ্তবয়স্কদের একাধিক ইট টানাও দেওয়া হয়। ইট টানা দেওয়ার কাজটি করে কর্মচারী ও আয়ারা।