বার্তা ডেস্ক:  গত আগস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, চীন থেকে ফ্যাক্টরি সরিয়ে নিতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর সুবিধা দেবেন তিনি। আর যেসব প্রতিষ্ঠান চীনের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখতে চায়, তাদের কাছ থেকে সরকারি কাজ কেড়ে নেয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই চীনেই অন্তত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ট্রাম্পের। শুধু তাই নয় চীনের ব্যাংকে রয়েছে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টও। মার্কিন পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে তার একটি চীনা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি নিয়ন্ত্রণ করে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস ম্যানেজমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে করও দেওয়া হয়েছে ওই অ্যাকাউট থেকে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক কর প্রদানের কাগজপত্র হাতে আসার পরই নিউইয়র্ক টাইমস খবরটি প্রকাশ করে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন মুখপাত্রের ভাষ্য হচ্ছে, ‘এশিয়ায় হোটেল ব্যবসার সম্ভাবনা যাচাইয়ের’ উদ্দেশ্যে ওই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠানের চীনের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের মত পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন ট্রাম্প। এমন কি তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের চীন সম্পর্কিত নীতির সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। বাইডেনের ছেলে হান্টারের সাথে চীনের ব্যবসায়িক লেনদেনের বিষয়গুলোর আলাদাভাবে সমালোচনা করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে আসে যে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রে ৭৫০ ডলার কর দেন ট্রাম্প। অন্যদিকে চীনা ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি থেকে স্থানীয়ভাবে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬১ ডলার কর দেয়া হয়েছে। এদিকে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের একজন আইনজীবী অ্যালান গার্টেন নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে বলেন যে, ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ‘যুক্তরাষ্ট্রে অফিস থাকলেও চীনা ব্যাংকের সাথে অ্যাকাউন্ট খুলেছে স্থানীয় কর দেয়ার সুবিধার্থে। ২০১৫ সাল থেকে অফিসটিতে কোনো কাজ হচ্ছে না। কোনো চুক্তি, লেনদেন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সেখানে সম্পন্ন হয়নি।’

ট্রাম্প চীন থেকে ফ্যাক্টরি সরিয়ে নিতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর সুবিধা দেবেন বলেছিলেন। এ সত্ত্বেও যেসব প্রতিষ্ঠান চীনের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখতে চায়, তাদের কাছ থেকে সরকারি কাজ কেড়ে নেয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। সে সময় এক ভাষণে ১০ মাসের মধ্যে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করার অঙ্গীকার করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা চীনের ওপর থেকে নির্ভরতা বন্ধ করবো।’ অন্যদিকে তিনি নিজেই কীভাবে চীনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন, তা উঠে এসেছে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে। ২০১২ সালে সাংহাইয়ে অফিস খোলার পর থেকে চীনে ব্যবসা ছড়ানোর প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পায়। তার করের কাগজপত্র থেকে জানা যায়, চীনে অন্তত পাঁচটি ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে অন্তত ১ লাখ ৯২ হাজার ডলার বিনিয়োগ রয়েছে তার।-একুশে

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn