ছাতকের চেলা নদীতে চলছে ড্রেজার দিয়ে অবাধে বে-আইনী বালু উত্তোলন
ছাতকের চেলা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনে চলছে ড্রেজার মেশিনের তান্ডব। হাওরাঞ্চলের অনেকাট নির্জন এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিনই বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে একটি চক্র। পাশাপাশি নদীতে ভ্রাম্যমান চাঁদাবাজ চক্রও রয়েছে সক্রিয়। ডেজার মেশিন দিয়ে সরাসরি নৌকা বোঝাই কওে বালু বিক্রি করায় এক দিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে অন্যদিকে বালু ব্যবসার সাথে যাদের জীবিকা নির্বাহ হয় তারা বেকার হয়ে পড়ছে। স্থানীয় ইজারাদারের লোকজন জেলা প্রশাসকের শর্ত ও চুক্তিনামা ভঙ্গ করে বালু উত্তোলন করছে বলে বালু শ্রমি দেও অভিযোগ। প্রতিনিয়তই ড্রেজার দিয়ে উত্তেলনকৃত বালু ছোট-বড় ইঞ্জিন চালিত নৌকা, বলগেট ও কার্গো বোঝাই করে বিক্রি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে চেলা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের এমনই দৃশ্যই দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে চেলা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীর ঘেষে যাওয়া রজ্জু পথের টাওয়ার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তিনটি টাওয়ার ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গিয়ে রজ্জু পথ ব্যবস্থা তছনছ হয়ে গেছে। দু’বছর ধরে দেশের একমাত্র রাষ্ঠ্রিয় রুজ্জু পথ বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। ছাতক বাজার একাতা বালু উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি স্থানীয় বারকি শ্রমিকদের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব প্রদান করে বালু উত্তোলন ও সরবরাহ করে আসছে। কয়েক হাজার শ্রমিক নদী থেকে বালতি দিয়ে বালু উত্তোলন করে নৌকা বোঝাই দিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে ৪০০-৫০০ টাকা আয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বা করে। কিন্তু স্থানীয় প্রযুক্তির ড্রেজার এসব শ্রমিকদের বেঁচে থাকার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শ্রমিকরা জানান, ইজারাদার জাকির মিয়ার লোকজন বালু মহাল ইজারার নামে অবৈধ ভাবে অবাধে বালু উত্তোলন ও সরবরাহ করছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে বলে তাদের ধারনা। এরই মধ্যে ছাতক বাজার একাতা বালু উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ চেলা নদী থেকে ২ টি ড্রেজার ও সরঞ্জামাদি আটক করলেও আটকের কয়েক ঘন্টা পর ছেড়ে দেয়া হয়। মুচলেখা দিয়ে এসব ড্রেজার ছাড়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে চেলা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি দেখতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের অবস্থান টের পেয়ে ড্রেজার বন্ধ করে দেয়। এ সময় বেশ ক’টি নৌকা বালু এত্তালন বন্ধ করে স্থান ত্যাগ করে। ড্রেজারে কর্মরত একাধিক নৌকা শ্রমিকরা ড্রেজার চালানোর পক্ষে কোন কাগজ-পত্র দেখাতে পারেনি। স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা জানান, ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলেনের ফলে বারকি শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়েছে। ইজারাদার জাকির মিয়া জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। বালু মহালে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা নেই। নদীতে ড্রেজার চালনা বন্ধ করা হোক। ছাতক বাজার একাতা বালু উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সত্তার মিয়া জানান, পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বারকি শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা রক্ষার স্বার্থে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করা প্রয়োজন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সাবিনা ইয়াসমিন লিখিত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলে ভুমি অফিসের তফসিলদার পাঠিয়ে খবর নেয়া হচ্ছে। ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিগ্রই ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালানো হবে।