ছাতকে জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পদ আত্মসাত
চান মিয়া–
ছাতকে ব্যাপক জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে উত্তরাধিকার সনদ নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসি ৪জনসহ ৬ভাই-বোনের পৈতৃক সম্পদ আত্মসাত করেছেন বড় ভাই সুনু মিয়া। এনিয়ে উপজেলার জুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সামালোচনা চলছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, উপজেলার ছৈলা-আফজালাবাদ ইউপির বাগইন গ্রামের মৃত আলা বকসের পুত্র সুলতান মিয়ার মৃত্যুকালে সুনু মিয়া, ইসলাম উদ্দিন ওরফে আজাদ মিয়া, সেলিম আহমদ, নূর জাহান বেগম, আফিয়া বেগম ও লিপি বেগমকে উত্তরাধিকারি হিসেবে রেখে যান। এদের মধ্যে আজাদ মিয়া, সেলিম, নূরজাহান ও লিপি বেগম স্ব-পরিবারে যুক্তরাজ্যে, আফিয়া বেগম চৌকা গ্রামের স্বামির বাড়িতে ও বড় ভাই সুনু মিয়া পৈতৃক সম্পত্তিতে বসবাস করছেন। গত ১০সেপ্টেম্বর প্রবাসি সেলিমও লিপির নাম বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সুনু মিয়া জালিয়াতির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকায় ৪জনের নামে একটি উত্তরাধিকার সনদ (নং স্মারক ২২২/২০১৭ইং) নেন। এ সনদ দিয়ে দু’জনের নাম ছাড়াই পরের দিন ১১সেপ্টেম্বর পৈতৃক ১৭একর ৫৬শতক ভূমির বাটোয়ারা দলিল (নং-৩২৫২/২০১৭/ছাতক) সম্পাদন করা হয়। এতে প্রতারণার মাধ্যমে সুনু মিয়া একাই ১০একর ৬৪শতক নিয়ে অপর ৩জনকে ৬একর ৯২শতক ভূমির মধ্যে আজাদ মিয়া ৪একর ৫২শতক, নূরজাহান বেগম ১একর ২০শতক ও ১একর ২০শতক ভূমি আফিয়া বেগমকে দেয়া হয়। এ ভয়াবহ জালিয়াতির সংবাদ পেয়ে প্রবাসি সেলিমও লিপি বেগম দূতাবাসের মাধ্যমে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জানা গেছে, সুনু মিয়ার ৪প্রবাসি ভাইবোনের টাকায় বাগইন গ্রামে তাদের পৈতৃক বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা ও এতিমখানার ব্যয়ভার বহনের জন্যে তারা মাসোহারা ৪০হাজার টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া দুটি প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করার কথা বলে সুনু মিয়া দীর্ঘদিন থেকে বাড়ির সাড়ে ১৭একর সম্পদের আয় ও সিলেটের বাসা ভাড়া বাবত প্রাপ্ত বছরে প্রায় সাড়ে ৮লাখ টাকা এবং ঘন ঘন লন্ডনে সফরে গিয়ে মাদরাসা ও এতিমখানার নামে ১৫/২০লাখ করে টাকা চাঁদা তুলে নিজেই আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি পরিবারের লোকজন এমনকি আত্মীয়-স্বজনদেরকে রহস্যজনক কারনে দু’টি প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের কোন হিসেব দিতে রাজি হননি। তিনি একাই এসব প্রতিষ্ঠানের স্থায়ি সভাপতিসহ একমাত্র হর্তাকর্তা। এভাবে তিনি লুঠপাট করে নামে-বেনামে দোকান-পাট ও বাসা-বাড়িসহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলেছেন বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। আফিয়া বেগম জালিয়াতিমূলক বাটোয়ারা দলিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, সুনু মিয়া তার আপন ভাই-বোনদের পৈতৃক সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে প্রতারণার একটি ইতিহাস গড়ে তোলেছেন। তার প্রাপ্য ১একর ৯৬শতক ভূমির মধ্যে দেয়া হয়েছে মাত্র ১একর ২০শতক। এভাবে সুনু মিয়া দু’জনকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত ও অন্যান্যদের নাম মাত্র পৈতৃক সম্পদ দিয়ে সবগুলো নিজেই আত্মসাত করেছেন বলে জানান তিনি। এব্যাপারে সুনু মিয়া অদ্য একটি দলিল সম্পাদন করে তাদের প্রাপ্য ভূমি তাদের নামে দিয়েছেন বলে জানান। ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ জানান, ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মিলন ধরের সুপারিশের ভিত্তিতে ৪জনের নামে উত্তরাধিকার সনদ দেয়া হয়। পরে জানা গেছে, সুলতান মিয়ার আরো এক পুত্র ও কন্যা যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। পরে সুনু মিয়াকে ডেকে বিষয়টি সংশোধন করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।