ছাতকে মাঠজুড়ে সোনালি ধানের ঝিলিক
মাহবুব আলম‚ ছাতক :: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় পুরোদমে আমান ধান কাটা শুরু হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। এবার কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের হাসি। হাওরে চৈত্রের আগাম বন্যায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার পর আমনের বাম্পার ফলনে ধান কাটা উৎসবে কোমর বেঁধে নেমেছেন কৃষাণ-কৃষাণিরা। বিল-হাওরের মাঠে এখন দুলছে পাকা-আধা পাকা সোনালি ধান। মৃদু বাতাসে ফসলে ভরা আমন ধানের নাচন দেখে কিষান-কিষানি মন আনন্দে ভরে উঠছে। ফসলের মাঠে চারদিকে এখন সোনালি ধানের মৌ-মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বেশির ভাগ আমন ক্ষেতের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার প্রতিটি ক্ষেতে আশানুরূপ ফলন দেখে সবাই আশায় বুক বেঁধেছেন। উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল আট হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের। ধানের বাম্পার ফলনে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের সঙ্গে কাজ করেছেন বলে বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে দেখা যায় সবুজের মাঝে সোনালি ধানের ঝিলিক। কোথাও পাকা ধান আবার কোথাও আধাপাকা ধান।
কালারুকা ইউনিয়নের কৃষক রাজ্জাক মিয়া জানান, এবার আমান ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে এবার খরা দেখা দেয়নি। আবার আমন মৌসুমের শুরুর দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যায় বীজতলা ও রোপণকৃত ধানের চারার ক্ষয়ক্ষতি হলেও বন্যা-পরবর্তী তাৎক্ষণিক জমিতে চারা রোপণ করতে পারায় যতটুকু রোপণ করেছি, সেখানে বেশ ভালোই ফসল উৎপাদন হয়েছে‚ বাজারদরও বেশ ভালো। উৎপাদন ব্যয় বেশি হলেও এবার পুষিয়ে নিচ্ছেন কৃষক। জাউয়াবাজার ইউনিয়নের বর্গাচাষি শহীদ মিয়া জানান, এবার বাম্পার ফলন পেয়েছি। আগাম বন্যায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় ঋণ নিয়ে এবারের আমন ক্ষেত করেছিলাম তবে ফলন ভালো হওয়ায় ঋণ পরিশোধ করে হয়তো লাভের মুখ দেখবো। পৌরসভার ভাজনা মহল এলাকার কৃষক কুদ্দুস মিয়া জানান, এবারের বাম্পার ফলন পেয়ে পরিবারের সবাই খুশি। চৈত্রের বন্যায় তারা ধান হারিয়ে পথে বসেছিলেন। এবার ধারের টাকায় চাষাবাদ করেছেন। তার পরও বাজারে ধানের দাম ভালো। তাই বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে একটু দাঁড়াতে পারবেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম বদরুল হক বলেন, অধিক ফসল উৎপাদনে এখানকার কৃষকরা নিয়মিত কৃষিক্ষেত্রে একাধিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কৃষকরা তাদের প্রশিক্ষণ ফসলের মাঠে কাজে লাগিয়েছেন বলেই ভালো ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।