ছাতকে সওজ’র সড়ক সংস্কারে অনিয়ম এলাকাবাসীর বাঁধায় কাজ বন্ধ
বিজয় রায়, ছাতকঃ
ছাতকে সড়ক ও জনপথের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন প্রায় আড়াই শ’ ফুট ভাঙ্গা সড়ক সংস্কার কাজ শুরু দীর্ঘদিনের শহরবাসীর দুঃখ অবসান হতে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে শহরবাসীর ভোগান্তির কারন সড়কের এ অংশটুকু নিয়ে বিভিন্ন দৈনিকে ফলাও করে প্রকাশিত হলেও কর্তৃপক্ষ ছিলেন উধাসিন। বিলম্ব হলেও চলতি বর্ষা মৌসুমের আগেই সড়কটির এ অংশের সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় শহরবাসীর মধ্যে ফিরে এসেছে স্বস্তি। কিন্তু টানা ক’দিন কাজ চলার পর স্থানীয় লোকজন সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। সংস্কার কাজে নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে স্থানীয় লোকজন কাজ বন্ধ রাখারও দাবী জানিয়েছেন সংশি¬ষ্টদের প্রতি। শহরের কাষ্টম এলাকা থেকে ডাক বাংলা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় আড়াই শ’ ফুট রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় ছিল। সড়কের এ অংশটুকুতে সৃষ্টি হয়েছিল ছোট-বড় গর্ত। বর্ষা মৌসুমে এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে ভয়াবহ রূপ ধারন করতো। সড়কের গুরুত্বপূর্ন এ অংশটুকু সংস্কারের জন্য স্থানীয় লোকজন বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্না দিয়েছেন। দীর্ঘদিন পর হলেও অবশেষে ভুক্তভোগি মানুষের দাবী কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছেন। পৌর শহরের অভ্যন্তরস্থ এ সড়কটি মুলত সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন। ফলে পৌরসভা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ কেউ সড়ক সংস্কারে আগ্রহ দেখায়নি। প্রতিদিন শহরের বৌলা, তাতীকোনা, মোগলপাড়া, চরেরবন্দ, মন্ডলীভোগ, ইসলামপুর ইউনিয়নসহ কোম্পানীগঞ্জের ইছাকলস ইউনিয়নের কয়েটি গ্রামের মানুষ এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়া পোষ্ট অফিস, ছাতক থানা ও হাসপাতালে যাওয়া-আসা করার একমাত্র সড়ক এটি। এমপি মুহিবুর রহমান মানিক ও উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের বাসভবনে যাওয়ার জন্য এ সড়কটিই ব্যবহার করতে হয়। এসব এলাকার মানুষ ও চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মন্ডলীভোগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতক বহুমুখী মডেল হাইস্কুল ও ছাতক ডিগ্রী কলেজে পুড়–য়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে এ সড়কটিই ছিল প্রধান অবলম্বন। স্থানীয় শীর্ষ দু’জনপ্রতিনিধি প্রতিদিনই এ ভাঙ্গা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেও সড়ক সংস্কারের ব্যাপারে তারা ছিলেন নির্বিকার। দামি গাড়িতে করে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান যাতায়াত করেন বলে তারা সড়কের ভাঙ্গা অংশ অনুভব করতে পারছেন না- এমন ধারনাই পোষন করতেন ভুক্তভোগি মানুষ। অবশেষে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগের অবসান হতে চলেছে। শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে কাষ্টম পর্যন্ত তিন ধাপে প্রায় দেড় থেকে দু’ফুট উচ্চতায় আরসিসি সড়ক সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৪ বছর আগে। কিন্ত ভোগান্তির এ অংশটুকু আরসিসি না দিয়ে এইচবিবি সংস্কার কাজ হচ্ছে। সম উচ্চতায় বালুর ইট বিচিয়ে এর উপর ঢালাই দিয়ে সংস্কার কাজ শেষ করা হবে। সম্প্রতি ভাঙ্গা-চুরা এ অংশের প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। সংস্কার কাজের দায়িত্ব পান সুনামগঞ্জের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী রেনু মিয়া। সড়কের কাজে অত্যন্ত নিম্মমানের ইট ব্যবহার করায় শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই এলাকাবাসীর বাধার মুখে কাজনন্ধ করে দেয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা রাহিম মিয়া জানান, কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে খুবই নিম্মমানের ইট। এসব ইট সামান্য আঘাতে ভেঙ্গে গুরা-গুরা হয়ে যায়। এসব ইট ব্যবহার করলে কয়েক মাসের মধ্যে সড়কটি পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। ঠিকাদার রেনু মিয়া জানান, কাজের ইষ্টিমিট ও ওয়ার্ক ওর্ডার অনুযায়ী সাইডে নির্মান সামগ্রী আনা হয়েছে। কিছু ইট এদিক-সেদিক হতে পারে। প্রয়োজনে ইট পরিবর্তন করে কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে সওজ’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী রমজান আলী সংস্কার কাজে অনিয়মের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অনিয়মের মাধ্যমে কাজ করতে দেয়া হবে না। ইট, বালু-সিমেন্ট দিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি জানান, যাতায়াতে সুবিধার জন্য স্বল্প সময়ের জন্য সংস্কার করা হচ্ছে। বছর দের বছরের মধ্যে সড়কটি আরসিসি সড়ক হিসেবে সংস্কার করা হবে।