ছাতক থেকে পাঠানো চাঁন মিয়ার কিছু খবর
স্কুলছাত্র ইমন হত্যা : সাক্ষ্য দিলেন বাদি-
ছাতক উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু ইমন হত্যা মামলার বাদি ও নিহতের পিতা জহুর আলী আদালতে প্রায় ২ ঘন্টা সাক্ষ্য দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২১মার্চ)সিলেটের দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালের বিচারক মকবুল আহসানের আদালতে তিন দীর্ঘ সাক্ষ্যতে তার ছেলেকে অপহরণ ও হত্যার বর্ণনা তুলে ধরেন। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ৩ এপ্রিল নির্ধারণ করেছেন আদালত। জহুর আলী আদালতে বলেন, তারা প্রথমে ইমনকে বিষ খাওয়ায়। পরে সুজন, জাহেদ,রফিক ও ছালেহ ছোরা দিয়ে হত্যা করার পর লাশ মাঠিতে পুতে রাখে। জহুর আলী সাক্ষ্যকালে আরও বলেন, ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ জুমআর নামাজ পড়ে তিনি বাড়ি যান। বাড়িতে তার ছেলে ইমনকে পাননি। আসরের নামাজের পর গ্রামের কালা মিয়ার মোবাইলে ফোন আসে। ফোনে ইমনকে অপহরণের কথা এবং ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। ছেলেকে উদ্ধার করতে টাকা নিয়ে দোয়ারাবাজারে যেতে বলে অপহরণকারীরা। কিন্ত সেখানে গিয়ে অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের সন্ধ্যান মিলেনি। ওইদিন রাে ত মামলার আসামী সুয়াইবুর রহমান (মসজিদের ইমাম) বাড়িতে গিয়ে মুক্তিপন প্রদানের পরামর্শ দেয়। বাদি তার সাক্ষ্যতে জানান, কয়েকটি নাম্বার থেকে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপনে টাকা পাঠানোর কথা ও যোগাযোগ করে অপহরণকারীরা। পুলিশ ও র্যাবকে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ জানতে পারে ব্যবহৃত নাম্বারগুলোর মধ্যে একটি মোবাইল ফোন নাম্বার সুয়াইবুর রহমানের। কয়েক দফায় অপহরণকারীদের ১ লাখ ২৫ টাকা দেওয়ার পর তারা আর টাকা পাঠাতে নিষেধ করে এবং জানায় ইমনকে তারা মেরে ফেলেছে। সুজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ তার দেখানো স্থান থেকে ইমনের রক্তমাখা তোয়ালে, লুঙ্গি, ছোরা ও বিষের বোতল উদ্ধার করে। এছাড়া বাদি তার সন্তান অপহরণ, মুক্তিপন আদায় ও হত্যার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে আদালতে সাক্ষ্যদেন। আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর শিশু ইমন অপহরণ ও হত্যা একটি বর্বর এবং লোমহর্ষক ঘটনা উল্লেখ করে জানান, আদালতে প্রথম সাক্ষ্য দিয়েছেন বাদি। পর্যায়ক্রমে অন্য সাক্ষ্যিরাও সাক্ষ্য দেবেন। আগামী ৩ এপ্রিল মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইমন ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী জহুর আলীর ছেলে ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানারকমিউনিটি বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর ছাত্র ছিল। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ তাকে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপনের টাকা পাওয়ার পরও অপহরণকারীরা শিশু ইমনকে হত্যা করে। ৮ এপ্রিল মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে কদমতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে শিশু ইমনের হত্যাকারী ঘাতক ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিষের বোতল ও রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে। এমনকি বাতিরকান্দি হাওর থেকে ইমনের মাথার খুলি ও হাতের হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত ইমনের বাবা জহুর আলী বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছাতক থানায় মামলা (নং-৩২) করেন। গত বছরের ২১ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে প্রেরণের জন্য গেজেট প্রকাশ করে। ফলে ১৯ সেপ্টেম্বর থকেই দ্রুত ট্রাইব্যুনালে মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়। একাধিক শুনানী শেষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তিন জনকে বাদ দিয়ে ৪ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। এরা হচ্ছে জামায়াত নেতা ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজন, বাত্তিরকান্দি গ্রামের জায়েদ, রফিক ও ছালেহ আহমদ। এরমধ্যে ছালেহ এখনও পলাতক রয়েছে। ##
সিংচাপইড়ে ২য় দফায় ১০টাকা কেজির চাল বিক্রি-
ছাতকে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ২য় দফায় হত দরিদ্রদের মাঝে ১০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয় শুরু হয়েছে। সারা উপজেলার ন্যায় মঙ্গলবার (২১মার্চ) সকালে সিংচাপইড় ইউনিয়নের হত দরিদ্রদের মাঝে ইউনিয়নের ফোর ষ্টার ট্রেডার্স ও খান এন্টারপ্রাইজ এই দু’টি ডিলারশীপ কেন্দ্রের একটি ফোর ষ্টার ট্রেডার্স থেকে চাল বিক্রয়ের উদ্বোধন করেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সচিব আব্দুস সবুর, ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন, ওয়ার্ড সদস্য মো. তুরন মিয়া, মো. ছাব্বির আহমদ, মো. মহিম উদ্দিন, আব্দুল জলিল, আংগুর মিয়া, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যা শাহানার বেগম, শফিকা বেগম, হায়াতুন নেছা, ইউপি ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালক লিঙ্কন দেবনাথ, ডিলার মিনহাজ আহমদ, রানা মিয়া, যুবলীগ নেতা রাসেল মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা রুসেল আহমদ প্রমূখ।
উল্লেখ্য, ফোর ষ্টার ডিলারশীপ থেকে প্রতি কার্ডধারীকে মাসে ৩০কেজি করে ইউনিয়নের ৬২০জনকে এবং খান এন্টারপ্রাইজ ডিলারশীপ থেকে ৩০১জনসহ মোট ৯২১জনকে উক্ত চাল প্রদান করা হবে। ২য় দফায় প্রথম দিনে ফোর ষ্টার ডিলারশীপ থেকে ৫৮২জন কার্ডধারীকে এবং খান এন্টারপ্রাইজ ডিলারশীপ থেকে ১৭৬জন কে চাল প্রদান করা হয়।
সিংচাপইড়ে ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্থ প্রদান
ছাতকে সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ইউনিয়নের জিয়াপুর, সিংচাপইড়, বানিকান্দি ও আইনাকান্দি গ্রামের প্রবাসীদের অর্থায়নে ইউনিয়নের ১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাবদলের খেলোয়ারদের ইউনিফ্রমের (পোষাক) জন্য নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১মার্চ) দুপুরে পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে নগদ অর্থ গ্রহন করেন ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেলের সভাপতিত্বে ও ইউপি সচিব আব্দুস সবুর এর পরিচালনায় অর্থ প্রদান পূর্ব আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ছাতক উপজেলা স্কাউটস’র যুগ্ম সম্পাদক ও চাঁনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ছাতক উপজেলা কাব লিডার ও ডামুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান। বক্তব্য রাখেন, ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন, ওয়ার্ড সদস্য তুরন মিয়া, ছাব্বির আহমদ, মহিম উদ্দিন, আব্দুল জলিল, আংগুর মিয়া, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যা শাহানার বেগম, শফিকা বেগম ও হায়াতুন নেছা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জগঝাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজিৎ রঞ্জন দাস, কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গণি, সরিষাপাড়া ও হবিপুর জনতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী, সৈয়দগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নান্টু রঞ্জন চন্দ, সদুখালি নওয়াগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন শাহনূর, আইনাকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অসিদ ধস্থিদার, কালেশ্বরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা আক্তার পাঠান, খাসগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার আলী, জিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছাব আলী, পুরান সিংচাপইড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল মিয়া, মামদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা সাথী রানী পুরকায়স্থ, মহদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রাহেলা বেগম ও সহকারি শিক্ষকা হৈমন্তি রানী প্রমূখ।
আইন ভঙ্গ করে- লাফার্জের কাছে কৃষি ভূমির মাঠি বিক্রি
ছাতকে আদালতের নির্দেশে থানা প্রশাসনের স্থগিতাদেশকৃত ভূমি থেকে জোরপূর্বক মাঠি বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালীচক্র। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামে এঘটনা ঘটে। জানা যায়, সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ছাতকের নোয়ারাই ইউপির বাতিরকান্দি গ্রামের ইসমাইল আলীর পুত্র লায়েক মিয়া বাদি হয়ে শারফিননগর মৌজার ১০টি দাগের ভূমি নিয়ে বিবিধ মোকদ্দমা নং ১০০/২০১৭ইং (ছাতক) দায়ের করেন। মামলার বাদি লায়েক মিয়ার মৌরসী ভূমি দাবি করে একই গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর পুত্র জহুর আলীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে এসব কৃষি ভূমি জবর-দখলের অভিযোগ করাহয়। এমামলায় আদালত এসব ভূমির উপর দঃবিঃ ১৪৪ধারা জারি করেন। ছাতক থানার এএসআই আব্দুল হালিম শিকদার স্মারক নং ২০৯, তাং ১০.০৩.২০১৭ইং মূলে দেয়া এক নোটিশে নি¤œ তপশীল বর্ণিত শারফিননগর মৌজার ১০টি দাগের ভূমি নিয়ে চলমান বিরুধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাদি লায়েক মিয়া ও বিবাদী জহুর আলীসহ দু’পক্ষের বিরুদ্ধে ফৗজদারি কার্যবিধি ১৪৪ধারা জারি করেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশক্রমে দু’পক্ষের কাছে থানা প্রশাসন থেকে এ নোটিশ জারিকরা হয়। নোটিশে আরো বলা হয়, শান্তি-শৃংখলা ভঙ্গজনক কোন কার্য করলে আইন মোতাবেক দু’পক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কিন্তু ছাতক উপজেলার ৭৪জেএলস্থিত শারফিননগর মৌজার ১৪৭নং খতিয়ানের ৬৯১. ৮৩৭, ৮৩৮, ৮৩৯, ৮৪০, ৮৫৩, ৮৫৪, ৮৫৮, ৮৫৯ ও ৬৭৭ ভূমি থেকে বিবাদী জহুর আলী ব্যাপক প্রভাব খাটিয়ে বিরুধিয় কৃষি ভূমি থেকে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিঃ এরকাছে থানা ও আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাঠি বিক্রি করে যাচ্ছেন। এ নোটিশে শান্তি ভঙ্গজনক কার্য করলে দু’পক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধানের কথা বলা হলেও আইন লংঘন করে প্রকাশ্য দিবালোকে এসব ভূমির মাঠি কাটা হচ্ছে। কিন্তু থানা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে জহুর আলীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। থানা প্রশাসনের এ রহস্যজনক নীরবতা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।
ভারতীয় মদ উদ্ধার
ছাতকে ৩৫ বোতল ভারতীয় অফিসার্স চয়েজ মদ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রাম থেকে এসব ভারতীয় অফিসার্স চয়েজ মদ উদ্ধার করা হয়। গোপন সংবাদদের ভিত্তি জাউয়াবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই শওকত হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে বড়কাপন গ্রাম সংলগ্ন বোকা নদীর তীর থেকে একটি বস্তায় মোড়ানো পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৫ বোতল ভারতীয় অফিসার্স চয়েজ মদ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।