সাইফুল ইসলাম খান।।

ছাত্রলীগের রাজনীতিতে পদ পেয়েছে কিন্তু পদ পাওয়ার পর যারা রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে তাদেরকে ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে পদ বঞ্চিতদের স্থলাভিষিক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। বুধবার (৮ মার্চ) দুপুরে  আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে পদবঞ্চিতরা অবস্থান নিয়েছে এমন খবরের সূত্র ধরে সাইফুর রহমান সোহাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা পদ বঞ্চিত তাদের সাথে আজ মধুর ক্যান্টিনে কোনো বৈঠক হওয়ার কথা ছিল না এবং মধুতে ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিতদের অবস্থান নেওয়ার খবর ভিত্তিহীন। আমি নিজে আজ সেখানে গিয়েছি।

ছাত্রলীগের বর্ধিত কমিটির বিষয়ে সোহাগ বলেন, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট হয় এবং তা গঠন হয়ে গেছে। তাই বর্ধিত কমিটি করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাত্রদলের মত কখনো নিয়ম লঙ্ঘন করে ৭০০ সদস্য বিশিষ্ট বাবা-ছেলে কমিটি হবে না। তবে যে সমস্ত নেতারা বিয়ে করেছেন, চাকরি করছে, পদত্যাগ করছেন, বহিস্কৃত হয়েছেন এবং মারা গেছেন তাদের পদগুলো শূন্য হওয়ায়, সে পদে পদবঞ্চিতদের নেওয়া হবে। অর্থাৎ স্থলাভিষিক্ত করা হবে। আর যারা পদ পাওয়ার পর রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছেন কোনো কর্মসূচিতে যাদের উপস্থিতি নেই তাদেরকেও বাদ দেওয়া হবে এবং তাদের জায়গায় পদবঞ্চিতদের নেওয়া হবে।

মধুতে পদবঞ্চিত প্রায় ৫০ জন অবস্থান নিয়েছে এমন সংবাদের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, মধুতে কেউ অবস্থান নেয়নি। আমি নিজে আজ দুপুরে মধুতে ছিলাম। পদ বঞ্চিতদের সাথে মৌখিক কথা হয়েছে। আগামীকাল (৯ মার্চ) আমরা তাদের সাথে বসব। বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যে পদগুলো শূন্য হয়েছে এবং যারা পদ পাওয়ার পর চাকরিতে যোগদান করেছে, বিয়ে করেছে এবং যারা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে, তাদের স্থলে পদ বঞ্চিত ও পরিশ্রমী নেতা-কর্মীদেরকে বসানো হবে। ঠিক কমিটিতে কতজনকে স্থান দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে আবিদ আল-হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি।

সব হল মিলিয়ে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ জনের মত পদ বঞ্চিতকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেওয়ার মত সুযোগ আছে কিনা? জানতে চাইলে আবিদ আল হাসান জানান, দুই কামিটি মিলিয়ে সেটা পারা যেতে পারে। কারন যারা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, পদ বঞ্চিতরা অন্যান্য দিনের মত আজও মধুতে আসছিল। তবে কোনো ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শন করেনি। বর্ধিত কমিটির বিষয়ে তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি ২০১ সদস্য বিশিষ্ট। বর্ধিত কমিটির নামে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ নেই। তবে এর মধ্যে থেকে অনেককে বাদ দিয়ে সেখানে পদবঞ্চিতদের সুযোগ দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি এবং সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অথচ পদবঞ্চিরা অপেক্ষা করে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তারা পদ পাবেন। কিন্তু ২০১৫ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠন এবং একই বছরের জুলাই মাসে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা বাদ পড়েছেন তাদের অপেক্ষার প্রহর বাড়তে থাকায় তাদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ তাদের স্থলাভিষিক্ত করার চিন্তা-ভাবনা করছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn