ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনকে শাসিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সংগঠনে নিয়ন্ত্রণ নেই বলে তাদের শাসান তিনি।মন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ নেতাদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনায় সংগঠনের নাম জড়ানোয় শীর্ষ দুই নেতাকে সতর্ক করেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে তাদের তৎপর হতে বলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটান থেকে গণভবনে ফেরেন। এ সময় অভিনন্দন জানাতে গেলে ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের এ দুই শীর্ষ নেতাকে শাসান বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য গণভবনে অপেক্ষা করছিলেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারাসহ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। এ সময় সোহাগ ও জাকিরকে ডেকে নেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তাদের বলেন, কিভাবে সংগঠন চালাও যে, কয়েকদিন পর পর নেতিবাচক কারণে ছাত্রলীগ সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়। এটা কী রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নাকি ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহারের হাতিয়ার?

ওবায়দুল কাদের দুই নেতাকে আরও বলেন, শক্ত হাতে সংগঠন সামলাও। যাতে আর কোনো নেতিবাচক ঘটনায় ছাত্রলীগের নাম না আসে। দেশব্যাপী কোথাও ছাত্রলীগের কোনো নেতা যেন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে না জড়ায়। এভাবে চলতে থাকলে দলের ইমেজ শেষ হয়ে যাবে। তাই দ্রুত এসব নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মন্ত্রী কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চান। ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করবেন বলে মন্ত্রীকে নিশ্চয়তা দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুর রহমান সোহাগ  বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের আমাদের অন্যতম অভিভাবক। তিনি বরাবরই আমাদের সংগঠনের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। বৃহস্পতিবারও তিনি আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামে সুইমিংপুল স্থাপনের বিরোধিতা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সেখানকার ছাত্রলীগের একাংশ। এতে পুলিশসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও আহত হয়। এছাড়া গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে জড়িয়েছিল সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। আবার সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজাকে কোপানো, পুরান ঢাকায় দর্জি বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা, ঢাকার কলেজছাত্রী আফসানা হত্যায় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও বিভিন্ন সময় সমালোচনার মুখে পড়ে সংগঠনটি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn