সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার ভবেরবাজার-নয়াবন্দর এবং গোয়ালাবাজার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেই শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষকে। তবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে দিতে হয়েছে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা। করা হয়েছে চুক্তি বাতিল। চলছে সংস্কার কাজের নতুন প্রক্রিয়া। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্য মতে, জগন্নাথপুর উপজেলার শেষ অংশ কাঠালখাইড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কে সাড়ে ৪ কোটি টাকার চুক্তিতে বিগতদিনে কাজ শুরু করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা কনস্ট্রাকশন। কাজে গাফিলতির কারণে কন্ট্রাক্ট বাতিল করে, ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর আবার নতুন করে ওই সড়কে সংস্কার কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ২৯ জুলাই টেন্ডার আহবান শেষে বর্তমানে দরপত্র মূল্যায়ন করা হলে, মাত্র একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করায় তা পুনরায় আবার টেন্ডার আহবান করা হয়। নতুন করে ওই কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর নতুন করে টেন্ডার আহবানে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়ন ও আশারকান্দি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি হচ্ছে ভবেরবাজার-নয়াবন্দর ও গোয়ালাবাজার সড়ক। এই সড়ক দিয়ে কেবল এই দুই ইউনিয়নের মানুষই নয়, জগন্নাথপুর উপজেলা অন্যান্য এলাকার মানুষও যাতায়াত করেন। বিশেষ করে এ সড়কে চলাচলকারী ওই দুই ইউনিয়নের সৈয়দপুর, শাহারপাড়া, দাওড়াই, পাঠকুড়া, জামালপুর, তিলক, মিলিক, কাঠালখাইড়সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ পড়েছেন মহাবিপদে।

এ অঞ্চলের মানুষ বিভাগীয় শহর সিলেট বা রাজধানী শহর ঢাকায় যেতে এই সড়কটি তাদের একমাত্র ভরসা। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে সড়কের অপর অংশ কাদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। সৈয়দপুর গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়কটি পুরোপুরি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই সড়কটিতে খানাখন্দ ও গর্ত রয়েছে। এক একটি গর্ত দেখতে পুকুরের মত। যার ফলে পথচারীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ আছাদ আহমদ ও জাহেদ জিম্মাদারসহ অনেকে জানান, সড়কটির দুর্দশা ও বেহাল অবস্থার কারণে বাড়ি থেকে বের হতেই মন মানে না। আর একটু বৃষ্টি হলে সড়কের বড় গর্তগুলো তখন পুকুরে পরিণত হয়। পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। শুধু তাই নয় এ সড়কটির জন্য আমাদের এলাকার অনেক প্রবাসী এখন আর দেশেই আসতে চান না। সৈয়দপুর বাজারের ফয়জুল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, নাজুক এই সড়ক দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত মালামাল আনতে হয়। এর জন্য দিতে হয় ডাবল ভাড়া। অনেক সময় আবার মালবাহী গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটছে।

ওই সড়কের দিয়ে চলাচলকারী অটোরিকশা (সিএনজি) চালক খালেদ মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলে কাদা ও গর্তগুলোতে পানি জমে থাকে। এতে ছোট-বড় যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে চলাচলে দুর্ভোগের শেষ নেই। কয়েকদিন পরপরই গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটি মেরামত করতে হচ্ছে। এতে আমরা গাড়ি চালকরা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম সারোয়ার বলেন, সড়কটির সংস্কার কাজের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সকল প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn