জগন্নাথপুরে কমছে শিক্ষার্থী, ২০ বছর ধরে নেই প্রধান শিক্ষক
স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হাওর বেষ্টিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের বেতাউকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ১৮৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণীতে ১৩, চতুর্থ শ্রেণীতে ৩২, তৃতীয় শ্রেণীতে ৩৫, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৩৬ ও প্রথম শ্রেণীতে ৩৮জন শিক্ষার্থী। এই বিদ্যালয়ে বেতাউকা ও গাদিয়ালা গ্রামের ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করে আসছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে দুইজন শিক্ষক রয়েছেন। একজন হলেন অতিরিক্ত দায়িত্বেথাকা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা খায়রুল বেগম। অপর জন আনোয়ার হোসেন সহকারী শিক্ষক। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে যাতায়াতে প্রকট সমস্যা দেখা দেয়। চলতি বর্ষা মৌসুমেও বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন নৌকা সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে দরিদ্র পরিবারের অভিভাবকদের নৌকা না থাকায় দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী গত চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। গত বছর গ্রামের লোকজনের সার্বিক সহযোগিতায় একটি নৌকা প্রস্তুত করা হয়েছিল গ্রামের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা যাওয়ার জন্য। এর পূর্বে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি নৌকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নৌকাটি গত বছরের প্রথমদিকে ভেঙে যায়।
বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র শাহান মিয়ার বাবা গাদিয়ালা গ্রামের আব্দুল হক বলেন, নৌকার অভাবে আমার ছেলে গত চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। আমার ছেলের মতো আমাদের গ্রামের শতাধিক দরিদ্র শিক্ষার্থীরা যাতায়াত সমস্যায় বিদ্যালয়ের পাঠদান নিতে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, একটি নৌকা হলে হাওরপাড়ের শিক্ষার্থীরা পাঠদানের সুবিধা পেত। বেতাউকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহবুব আলম চৌধুরী বলেন, যাতায়াতের সমস্যায় শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট রয়েছে। ফলে চরমভাবে বিঘ্ন হচ্ছে পাঠদান। এলাকার লোক জন আরো জানান এই স্কুলে সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন চায়না রানী দাস তিনি এক বছর ধরে ডেপুটেশনে গোঁষগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। বেতাউকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা খায়রুল বেগম বলেন, যাতায়াতের কারণে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার প্রধান কারণ। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক পদের মধ্যে দুইজন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। গত ২০ বছর প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার জুয়েল মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদ্যালয়ের যাতায়াতের জন্য একজন মাঝিসহ একটি বড় নৌকা দিয়েছিলেন। ৫ বছর নৌকার আর্থিক খরচ আমি বহন করেছি। বর্তমানে নানা সমস্যায় কারণে এই সেবাটি দিতে পারছি না। তবে নৌকার সংকটের জন্য পড়াশুনা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে বিষয়টি আমাকে ভাবাচ্ছে। এদিকে নয়া চিলাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষিকা শিবানী দাস বলেন, বর্ষাকালে যাতায়াত সমস্যায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত কম থাকে। তিনি বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩৯৮জন। ২০১৭ সালে তিনি একাই বিদ্যালয়ের পাঠদান চালিয়ে আসছেন। প্রধান শিক্ষকসহ চারটি পদেই শূন্য। প্যারা শিক্ষক হিসেবে দুইজন রয়েছেন। এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, হাওরাঞ্চলে বর্ষাতে চলাফেরার ব্যাহত ঘটে। এজন্যে বিদ্যালয়গুলিতে তুলনামূলকভাবে শিক্ষার,। শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন বলেন হাওরাঞ্চলে বর্ষাতে চলাফেরার ব্যাহত ঘটে। এজন্য বিদ্যালয়গুলিতে তুলনামূলকভাবে শিক্ষার কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটছে,, শিক্ষক স্বল্পতা কম, এবার নতুন নিয়োগে পুরন হবে।