ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ-

জগন্নাথপুরে দুর্গত মানুষের পাশে সরকার ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও সরকারের পাশাপাশি আরো অনেক ব্যক্তি বা সংগঠন এগিয়ে আসার কথা ছিল। যে কোন নির্বাচন আসলে গরীবদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সম্ভাব্য প্রার্থী, অতিথি পাখি নামে খ্যাত প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠন। অথচ বর্তমানে জগন্নাথপুরের দুর্গত অসহায় মানুষের পাশে এখন কেউ নেই। শুধু সরকার তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে।

জানাগেছে, গত ১ এপ্রিল রাতে অকাল বন্যায় জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরসহ সকল হাওর পানির নিচে তলিয়ে যায়। এবার কাচা থোড় ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা কোন ধান তাদের গোলায় তুলতে পারেননি। যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকসহ অসহায় সাধারণ মানুষের মধ্যে হাহাকার দেখা দেয়। যে সময় মানুষের গোলায় ধান ও মুখে হাসি থাকার কথা ছিল, ঠিক সেই সময়ে এক মুঠো খাবারের জন্য লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কোন মানুষের মুখের দিকে থাকানো যাচ্ছেনা। সবার মুখের হাসি হারিয়ে গেছে কান্নার গভীরে।
ফসলহানির পর দ্রুত বেড়ে যায় চালের দাম। ৩০ টাকা থেকে ৬০ পর্যন্ত প্রতি কেজি চালের দাম বৃদ্ধি পায়। বাজারে চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে জনমনে নাভিশ্বাস উঠে। চার দিকে শুরু হয় হাহাকার। তখন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে। অসহায় লোজনকে বাঁচানোর জন্য খোলা বাজারে ১৫ টাকা কেজি দরে সরকারি (ওএমএস) চাল, ভিজিএফ এর চাল, নগদ টাকা, আটাসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়। এ সময় সরকারের পক্ষে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। যদিও এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে বিভিন্ন স্থানে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি (ওএমএস) এর চাল সংগ্রহ করতে অসহায় লোকজন রাত জেগে অপেক্ষা করেও অনেকে শূন্য হাতে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। তবুও জগন্নাথপুরের দুর্গত মানুষের ভাগ্যে সরকারি সহায়তা ছাড়া আর কিছু জুঁটেনি। যদিও দু’ একটি এনজিও সংস্থা সামান্য সহায়তা করার খবর পাওয়া গেলেও অতিথি পাখিদের দেখা যায়নি। প্রবাসী অধ্যূষিত জগন্নাথপুরে প্রবাসীদের এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। প্রবাসীরা বিভিন্ন সংগঠন বা ট্রাস্টের নামে বিভিন্ন সময়ে গরীবদের সহযোগিতার নামে গলা ফাটিয়ে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন নির্বাচন আসলে বিভিন্ন প্রার্থী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা নানাভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে থাকলেও কোন নির্বাচন না থাকায় বর্তমানে জগন্নাথপুরের দুর্গত মানুষের পাশে তাদেরকে দেখা যায়নি। এ নিয়ে দুর্গত মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামি যে কোন নির্বাচনে বর্তমানের দুর্গত পরিস্থিতির প্রভাব পড়বে বলে সচেতন মহলের অনেকে মনে করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn