পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি পরাজিত হয়েছে। এই নির্বাচনকে দেখা হচ্ছিল মোদির জনপ্রিয়তার একটি পরীক্ষা হিসেবে। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ সংকটের মধ্যে তার সরকারের ব্যর্থতা ব্যালট বাক্সে কতোখানি প্রভাব ফেলেছে সেটিও যাচাই করা গেছে এ নির্বাচন থেকে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি’র থেকে সপষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছে। তবে আসামের নির্বাচনে এগিয়ে আছে বিজেপি। আবার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরালা ও তামিলনাড়ুতে পিছিয়ে আছে দলটি। পন্ড্রুচেরিতে এখনো ফলাফল সপষ্ট নয়।
কোভিড মহামারির ভয়াবহতার মধ্যেই দেশটিতে এই নির্বাচন হয়েছে।

 

নির্বাচনকালীন সময়ে জনসভা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে সমালোচিত হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। তার জনসভাগুলোতে ছিল অসংখ্য মানুষ। পশ্চিমবঙ্গেও দেখা গেছে একইচিত্র। যদিও রাজ্যটিতে একইসময়ে কোভিডের রেকর্ড সংক্রমণ দেখা গেছে। নয়াদিল্লিভিত্তিক লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অরাতি জেরাথ বলেন, দেশের তিন স্থানে তিনটি বিজেপিবিরোধী স্থানীয় দল জয় পাচ্ছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে মোদিবিরোধী শিবিরের শক্তির কেন্দ্রে পরিণত হবে এ দলগুলো। এই নির্বাচনের কারণে সরকারকে উঠেপড়ে বসতে হবে। এই ফলাফল আমাদেরকে জানান দিচ্ছে যে, সামনের দিনগুলোতে বড় রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে মোদি সরকার।
ভারতের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। একদিনে শনাক্তের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুতেও হয়েছে রেকর্ড। যেদিন এই ভোট গণনা হয় তার একদিন আগেই রাজধানী দিল্লিতে অক্সিজেনের অভাবে ১৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ১০ দিনে এমন অন্তত ৩টি ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার বাটরা হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক শুধাংশু বাঙ্কাটা বলেন, আমরা সরকারকে সাবধান করে আসছি। কারণ, এই সংকট এখনো অব্যাহত আছে এবং প্রতিদিন অবস্থা খারাপ হচ্ছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, তার প্রশাসন আদালত ও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছে যে, প্রতিদিন তাদের অক্সিজেনের চাহিদা ৯৭৬ টন। সেখানে তারা পাচ্ছে মাত্র ৪৯০ টন।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ ও পূর্বে ঘাঁটি গাড়তে চেয়েছিল বিজেপি। তবে আসাম ছাড়া অন্য কোথাও সুবিধা করতে পারেনি দলটি। আসামে নাগরিকত্ব নিয়ে বড় রাজনৈতিক আলোচনা চলছে এবং বিজেপি এতে বড় ভূমিকা পালন করছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি’র উদ্দেশ্য ছিল মমতার তৃণমূলকে সরিয়ে নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। মমতা বরাবরই হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn