জবানবন্দি দেননি ওসি প্রদীপ, কারাগারে প্রেরণ
বার্তা ডেস্ক: অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় চতুর্থ দফা রিমান্ড শেষেও কোন জবানবন্দি দেয়নি টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে র্যাবের একটি দল তাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির করলে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল ইসলাম জানান, ‘সিনহা হত্যার মামলায় আটক বরখাস্ত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমারকে চার দফায় মোট ১৫ দিন রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে সে মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আমরা সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। আজ মঙ্গলবার ছিল চতুর্থ দফায় ১ দিনের রিমান্ডের শেষ দিন। আমরা তাকে আদালতের কাছে সোপর্দ করেছি। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তবে, সিনহা হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি হলেও ওসি প্রদীপ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়নি বলেও জানান তিনি। এর আগে গত ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপসহ ৭ আসামিকে ৭ দিন করে রিমান্ড দেয় আদালত। পরে ২৪ আগস্ট ৪ দিন, ২৮ আগস্ট ৩ দিন ও ৩১ আগস্ট ১ দিনসহ চার দফায় মোট ১৫ দিন রিমান্ড মন্জুর করেন আদালত। আদালতের আদেশ পেয়ে এই ১৫ দিনের বিভিন্ন সময়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত সংস্থা র্যাব।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। তিনি মারিশবুনিয়ার একটি পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। এরপর গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে মামলার আসামি ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়। অন্যদিকে, সিনহা হত্যার পর পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিন এপিবিএন সদস্যকে গ্রেফতার করে এলিট ফোর্সটি। অপর দিকে একই ঘটনায় টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। আর সাক্ষী অপহরণের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় পরে আরেকটি মামলা হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫টি মামলা হয়েছে এবং মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১৩ জন।