জলমগ্ন জগন্নাথপুর পৌরশহর
শনিবার (০৩ জুন) কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে জগন্নাথপুর পৌরশহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ উঠে চরমে। পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে এসমস্যা বিরাজ করে আসছে। বিশেষ করে শহরের প্রাণকেন্দ্র পৌর পয়েন্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্য্যালয়ের মোড় পর্যন্ত করুণ অবস্থা বিরাজ করছে অনেক দিন ধরে। সংকট উত্তরণে কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে দুর্ভোগের সঙ্গে বসবাস করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। পৌর নাগরিকরা জানান- শনিবার ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ভারীবর্ষণে অধিকাংশ পৌরশহরের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। জগন্নাথপুর পৌরশহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা পৌরসভার কার্যালয়ের সামন থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের মুখ পর্যন্ত সড়কে অসংখ্যা খানানন্দ সৃষ্টি হয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সেই সঙ্গে বৃষ্টির পানিতে সড়কে ডুবে যায়। সড়কের পাশের ড্রেন থেকে ময়না-আর্বজনা বৃষ্টির পানিতে ভেসে সড়কে জমে থাকে। আবদুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে রানীগঞ্জ সড়কে বড় গর্ত বৃষ্টি হয়ে পুকুরে পরিণত হয়েছে। যে কারণে শিক্ষার্থীসহ ওই সড়কের পথচারীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পৌরশহরের উত্তর ইকড়ছই আবাসিক এলাকায় জগন্নাথপুর-সুনামগঞ্জ সকড়ের দুই পাশে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও শহরের থানার রোড, উপজেলা পরিষদ রোড, ইকড়ছইসহ বিভিন্ন সড়কে সামান্য বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ইকড়ছই এলাকার বাসিন্দা আপ্তাব উদ্দিন জানান- কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টির পানিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে আমরা। এ সমস্যা কয়েক যুগ ধরে বিরাজ করছে। একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
জানা যায়- ১৯৯৯ সালে জগন্নাথপুর পৌরসভা গঠন করা হলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ড্রেন নির্মাণ করা হয় এবং পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের অংশ হিসেবে সড়ক নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন ধরে কোন সংস্কার না হওয়ায় ময়লা আবর্জনা ভরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ড্রেনের ওপরের স্লাব ভেঙে যাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণ না-থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশন না-হয়ে উক্ত সড়কে পানি জমে থাকে। শহরের ব্যবসায়ী বকুল গোপ জানান- পৌরসভার সামনের ড্রেন পানি নিষ্কাশনের বদলে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই ড্রেনের মুখ খোলা থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন। আবদুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ দাস জানান- সড়কে সংস্কার না-হওয়ায় পিচ উঠে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে পুকুরের ন্যায় পরিণত হয়েছে সড়কটি। ফলে বৃষ্টির দিনে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সমস্যা সমাধানে বিষয়টি দ্রুত সুনজর দেয়া দরকার। জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আবদুল মনাফ জানান- সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধিন সড়ক ড্রেনে পৌরসভার কাজ করার এখতিয়ার নেই। তারপরও আমাদের সাধ্য অনুযায়ী নাগরিক দুর্ভোগ এড়াতে আমরা কাজ করছি।