মারুফ খান মুন্না :: অর্থ আত্বসাতের অভিযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে গ্রেপ্তারের পর অনিবার্য কারণ দেখিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ বর্ষের সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফয়জুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনিবার্য কারণবশত’ আগামী ৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত ও প্রাইভেট এমএ, এমএসএস, এমবিএ, এমএসসি, ও এম মিউজ শেষ পর্ব (আইসিটিসহ) পরীক্ষা স্থগিত করা হল। কিছুদিনের মধ্যে উল্লিখিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। তবে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কারাগারে থাকায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ জানিয়েছেন। এদিকে পরীক্ষা স্থগিতের খবরে সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। দুর্নীতিবাজ একজন কারাগারে থাকায়,লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ক্ষতি কোনভাবেই কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
সিলেট সরকারী কলেজের বিবিএস ফাইনাল ইয়ারে অধ্যয়নরত বঙ্গবন্ধু স্কলার্সশীপ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ছাত্র মো: জুনেদুর রহমান বলেন, ‘ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০১২-১৩ সেশনের স্নাতক ফাইনাল পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়ার কথা,মার্চ মাসের শেষ পর্যায়ে এলেও পরীক্ষার রুটিনের কোন খবর নেই। দুর্নীতিবাজ একজন কারাগারে গেছেন তো কি হইছে? উনি তো ভারপ্রাপ্ত ছিলেন। ভিসি মহোদয় চাইলে আরেকজনকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে চলমান সমস্যার সমাধান করতে পারেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সিলেট এম.সি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র কাওসার আহমেদ জানান, ‘ আমরা শীঘ্রই প্রতিবাদ কর্মসুচী পালনের মাধ্যমে ভিসি স্যারকে অনুরোধ করবো অবিলম্বে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। অন্যথায় অতীতের ন্যায় অধিকার আদায়ে সিলেট তথা সারাদেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়ে রাজপথে নামতে দ্বিধাবোধ করবে না।’
সিলেটের এক অভিবাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে যেখানে শিক্ষা ব্যাবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে একজন ব্যাক্তির জন্য আমাদের সন্তানদের এভাবে পিছিয়ে দেওয়ার আসল উদ্দেশ্য কী? তিনি এই বিষয়ে সিলেটের কৃতিসন্তান শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।’ এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, “আমাদের কন্ট্রোলার সাহেব গ্রেপ্তার, উনি পরীক্ষার মূল ব্যক্তি। উনার জামিন বা মুক্তি না হলে আমাদের জিম্মায় পরীক্ষা নেওয়া কঠিন।”বিষয়টির সমাধানের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “কিছুদিনের মধ্যে আবার পরীক্ষার সিডিউল দেওয়া হবে। তাই আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে ২০১২ সালে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান, তখনকার উপাচার্য অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১৪ মার্চ গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে আছেন বদরুজ্জামান।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৬৯ বার