সাভারের আশুলিয়ার পাথারিয়া ইউনিয়নের চৌরাবালি এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া চার ‘জঙ্গি’র একজন জামালগঞ্জের ভীমখালী ইউনিয়নের হুগলী কৃষ্ণনগর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন। আলমগীরের দাদা আব্দুল করিম মুক্তিযুদ্ধের সময় চিহ্নিত রাজাকার ছিলেন।আব্দুল করিমের ছেলে আব্দুল হান্নান এলাকায় আদম ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি। আব্দুল হান্নানের ৫ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে ২ নম্বর জঙ্গী আলমগীর। আলমগীর সিলেট মানিকপুর মাদ্রাসা থেকে কওমি মাদ্রাসার লাইনে ৮ম এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জের জামলাবাজ মাদ্রাসা থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা শেষে একই উপজেলার দরগাহ্পুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল সম্পন্ন করে। এরপর ছাতকের হায়দরপুর মাদ্রাসা থেকে আলীম পাস করে সে।

আলিম পাস করে পরিচিত আরেকজনের মাধ্যমে ঢাকার আশুলিয়ায় সুতা’র ফ্যাক্টরিতে কাজ নেয় সে। গত চৈত্র মাসে (মার্চ মাসে) সর্বশেষ বাড়ি আসে আলমগীর। আলমগীরের বাবা আব্দুল হান্নান মুঠোফোনে জানিয়েছেন, ছেলে আলমগীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ ছিল তার। ৩-৪ দিন আগে মুঠোফোনে আলমগীর বাড়িতে কথা বলেছে। এদিকে, গ্রেপ্তারকৃতদের চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগরের  জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম খাইরুস তাসনিন এ আদেশ দেন। গ্রেপ্তার হওয়া ঐ চার ‘জঙ্গি’ হলেন  মোজাম্মেল হক, রাশেদুন্নবী, ইরফানুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন। তাঁদের মধ্যে দলনেতা মোজাম্মেল হক। এর আগে র ্যাবের পক্ষ থেকে এই চারজনকে আদালতে নিয়ে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রোববার চার ‘জঙ্গির আত্মসমর্পণের’ পর অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে র ্যাব। এরপর  চৌরাবালি এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানার’  ভেতরে আর কেউ নেই বলে র ্যাব জানায়।

রোববার বেলা আড়াইটার দিকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র ্যাবের আইন ও গণমাধ্যম    শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আটক চারজন গুলশানের হোলি আর্টিজান  বেকারিতে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী নব্য জেএমবির তামিম গ্রুপের সদস্য। ওই এলাকায় তাঁদের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। মাহমুদ খান বলেন, দেড় মাস আগে ওই চারজন পোশাক কারখানার শ্রমিক পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র ্যাব শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে বাড়িটি ঘিরে অভিযান চালায়। রাত তিনটার দিকে ‘জঙ্গিরা’ জানতে পারেন, র ্যাব বাড়িটি ঘিরে  রেখেছে। রোববার সকাল আটটার দিকে ‘জঙ্গিরা’ র ্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা  ছোড়ে। র ্যাব বারবার তাঁদের আত্মসমর্পণ করার জন্য মাইকে আহ্বান জানায়। সর্বশেষ তাঁদের বলা হয়, দুপুর ১২টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে র ্যাব অভিযান চালাবে। এতে ‘জঙ্গিরা’ নিহত হতে পারে। এরপর একজন ‘জঙ্গি’ আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর মাধ্যমে বাকি তিনজন ‘জঙ্গিকে’ আত্মসমর্পণ করানো হয়। আটক ‘জঙ্গিদের’ জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান মুফতি মাহমুদ খান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn