জামালগঞ্জে কিশোরীদের বর্ণাঢ্য নৌকাবাইচ
কোন মেস্তুরি নাও বানাইছে কেমন দেখা যায়, ঝিলমিল ঝিলমিল করেরে ময়ুর পংখী নাও”, ‘মারো টান হেইয়ো, জিতেই যাব হেইয়ো’- বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের এসব বিখ্যাত গান কিশোরীদের সুরে বেজে উঠছিল জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের ছনোয়ার হাওরে। জাতীয় কন্যা ও শিশু দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার ছনোয়ার হাওরে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই দেখা গেল সুরে সুরে শত সহস্র মানুষের উল্লাস। এবারের কন্যা ও শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘কন্যা শিশুর জাগরণ, আনবে দেশে উন্নয়ন’। বেসরকারি সংস্থা জন্তিয়া ছিন্নমূল সংস্থার ট্রিপিং পয়েন্টে প্রজেক্টের এর আয়োজন করে।
চারটি ইউনিয়নের কিশোরীরা এ বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ব্যতিক্রমী এ নৌকাবাইচ দেখতে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা দেয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ৪টি নৌকার কিশোরী খেলোয়াড়রা কখনো একদল আরেক দলকে পেছনে ফেলে আগে ওঠে। আবার পেছনে পড়ে। এসময় পাড়ে দাঁড়ানো হাজারো দর্শকরা করতালির মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহ যোগান। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নেয়া চারটি দলের মধ্যে প্রথমস্থান অধিকার করে উত্তর ইউনিয়ন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সানাবাজার, তৃতীয় স্থান বেহেলী ও চতুর্থ হয় প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- জেছিস’র নির্বাহী পরিচালক এটিএম বদরুল আলম।
মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান হাফিজা আক্তার দিপুর সভাপতিত্বে ও সুরাইয়া সুলতানার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন-উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আল ইমরান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য ফৌজিআরা শাম্মী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরুল হাসান। অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন জেলা আ. লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম শামীম, অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসেম, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক এম নবী হোসেন, উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রজব আলী, বেহেলী ইউপি চেয়ারম্যান অসিম চন্দ্র তালুকদার, কেয়ার প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম, মাসুদ আাব্দুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। উপস্থিত বক্তারা বলেন, এক সময় গ্রাম বাংলার অন্যতম উৎসব ছিল নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। কালের আবর্তে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম ভুলে যেতে বসেছে। মূলত আগামী প্রজন্মকে গ্রামীণ ঐতিহ্য সম্পর্কে জানান দিতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।