ভারতের মেঘালয়, আসাম রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে সুনামগঞ্জের হাওরের নিভৃত পল্লী গুলো প্লাবিত হয়ে পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। হাওরের বহু গ্রামের বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বিশুদ্ধ পানীয়, বাসস্থান ও খাদ্য সংকটে ফসলহারা কৃষক পরিবারে এখন হাহাকার বিরাজ করছে। পানি বন্ধী কৃষক পরিবার গুলোতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। যে দিকে চোখ যায় চারি দিকে থৈ থৈ পানি, কোথায় কোথায় বিভিন্ন গ্রাম দেখে মনে হচ্ছে হাওরে বুকে যেন ভেসে আছে। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধরমপাশা, দিরাই, শাল্লাসহ হাওরের গ্রাম গুলোতে বন্যা কবলিত মানুষের মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ ও সাচনা-সুনামগঞ্জ সংযোগ সড়ক পনিতে ডুবে বসত বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রোপা আমন ও বীজতলার পানিতে ডুবে গেছে। বসত ঘরে পানি উঠায় অনেকেই গবাদি পশু ও হাস-মুরগী নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। উপজেলা সদরের সাথে ৬ ইউনিয়ন ফেনারবাঁক, ভীমখালী, বেহেলী, সাচনা, উত্তর ইউনিয়নের হাজার-হাজার মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। হাট-বাজারে পানি ওঠার কারণে নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়তই। বন্য কবলিত হাওরের গ্রামের লোকজন খদ্য সংকটে ভুগছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের লোকজন বিশুদ্ধ পানি ও খারাবেরর সহায়তার আশায় ট্রলার দেখলেই ভীর জমাচ্ছেন। অনেক পরিবার রয়েছে তাদের ঘরে এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা নেই।

অতীতে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কৃষকরা বহুবার ফসল হারিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এবারের মতো এমন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হাওরবাসী আর কখনো হননি। উপজেলার ফেনারবাঁক, শান্তিপুর, পশ্চিম ফেনারবাঁক, ভেদরপুর, হঠামারা, নাজিমনগর, উদয়পুর, লক্ষিপুর, ইনাত নগর, বীণাজুরা, খুজারগাঁও, মাতারগাঁও, রসুলপুর, রাজাপুর। সাচনা ইউনিয়নের রক্তির পাড়, শামীম নগর, হরিয়ারপুর বাগ হাটি, চানপুরসহ বাবনগাঁও, জামলাবাজ. নূরপুর, মফিজনগর, ফতেহ পুর, বেহেলী ইউনিয়নের নিতাইপুর, হিজলা, নোয়াপাড়া, দুর্গাপুর, হরিপুর, আছানপুর নয়াপাড়া, হাওরিয়া আলীপুর, রাধানগর পশ্চিম পাড়া, পুঁটিয়া। উত্তর ইউনিয়নের, ইনছানপুর, মমিনপুর, সদর কান্দি, কালিপুর পশ্চিম পাড়া, কালীবাড়ি,কামলাবাজ,আলীপুর ,শরিফ পুর,কালিবাড়ী,গুলের হাটি। সদর ইউনিয়নের তেলিয়া, লামাপাড়া, কাশিপুর, চানপুর ভুইয়ার হাটি, আবুর হাটি, সোনাপুর, কদমতলী, উমেদপুর, মোহনপুর। ভমিখালী ইউনিয়নের হারার কান্দি পশ্চিম পাড়া, ফেকুল মাহমুদপুর নতুন পাড়া, গোলামীপুর মুচিপাড়া, তেরানগর নতুন পাড়া, শ্রীপুর দক্ষিণ পাড়া সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউএও’র অতিরিক্ত দায়ীত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মনিরুল হাসান বলেন, প্রশাসনের পক্ষে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সমস্য মোকাবেলার জন্য সকল প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলায় একটি কন্টোল রুম খোলা হয়েছে, স্বাস্থ্য বিভিাগে ওষধ সরবরাহ আছে, সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় সহায়তা প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn