জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা

সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম

জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তিনি জামিন পেয়েছেন। রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) বাকী বিল্লাহ রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। সকাল পৌনে ১১টার দিকে আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভার্চ্যুয়ালি এ শুনানি হয়। শুনানির জন্য সকাল থেকেই আদালতে অপেক্ষায় ছিলেন আইনজীবীরা। আদালতের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিড় দেখা গেছে।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এ মামলার আসামি রোজিনা ইসলাম যদি তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দেন, সেক্ষেত্রে তার জামিনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। পরে রোজিনা ইসলামের পক্ষ থেকে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ যে শর্ত দিয়েছে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আদালত বলেন, গণমাধ্যম শক্তিশালী মাধ্যম। সবাই যেন দায়িত্বশীল আচরণ করেন।

রোজিনা ইসলামের আরেক আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার সাংবাদিকদের জানান, পাসপোর্ট জমা দেওয়া সাপেক্ষে আদালত রোজিনার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে আরও ছিলেন আইনজীবী আমিনুল গনি টিটো, আশরাফ-উল আলম, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রশীদ রোজিনার পক্ষে আইনি সহায়তা দেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইনজীবী মশিউর রহমান, আসকের মিজানুর রহমান, মহিলা পরিষদের দীপ্তি সিকদার, শাম্মী আক্তার। এছাড়া আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন সুমন কুমার রায়, মাহবুবুল হক, আবদুর রহীম।

এ দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তাপস কুমার পাল ও হেমায়েত উদ্দিন খান। জামিন আবেদনের শুনানির পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের জানান, এ মামলায় কিছু তথ্য-উপাত্ত আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে কী তথ্য, তা তিনি বিস্তারিত জানাননি। প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রীয় গোপন নথি চুরির’ অভিযোগে অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে গত ১৭ মে শাহবাগ থানায় মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু জানিয়েছিলেন, এই মামলার জামিন আবেদনে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন ও আদেশের জন্য রোববার দিন ধার্য করেন আদালত।

পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গত সোমবার রোজিনা সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে বেলা ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাতেই রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরের দিন মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনার বিরুদ্ধে পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন শুনানির জন্য ২০ মে বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। এদিকে রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলাটির তদন্তভার গত বুধবার পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এখন ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা শাখা এ মামলা তদন্ত করছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn

এ বিভাগের আরো খবর

একজন খোকন মাষ্টার- সুপ্ত বাসনা যার হৃদয়ে

একজন খোকন মাষ্টার- সুপ্ত বাসনা যার হৃদয়ে

শিক্ষা গুরু বাবু সুবোধ রঞ্জন দাস

শিক্ষা গুরু বাবু সুবোধ রঞ্জন দাস

মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর

মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর