জেলা আ”লীগের ৪ নেতাকে নিয়ে উল্লসিত নেতাকর্মী
আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ:সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের আনুষ্ঠানিক মতামত ছাড়াই স্বয়ং দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী প্রধান্মন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপির দ্বারা সরাসরি নির্বাচিত ৪ জন নেতার নাম ঘোষণায় আওয়ামী শিবিরে আনন্দের বন্যা বইছে। বিরোধীয় সকল গ্রুপকে খুশী করার এরকম ব্যতিক্রমী সম্মেলন অতীতে আর হয়নি। সবাই বলছেন বঙ্গবন্ধু যেমন জনপ্রিয় ও গ্রহনযোগ্য নেতাদেরকে উপযুক্ত মূল্যায়ন করতেন তেমনি শেখ হাসিনাও তাই করলেন। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভরসাস্থল শীর্ষস্থানীয় দুজন নেতাকেই তিনি দলের সভাপতি সম্পাদক নিয়োজিত করেছেন। সে সাথে দলের ধারাবাহিক নেতৃত্বের গতিশীলতাও রক্ষা করেছেন।
বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি কে সভাপতি ও জুনিয়র সহ-সভাপতিকে সাধারণ সম্পাদকের পদে নির্বাচিত করে সাংগঠনিক কার্যক্রমের শৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতাকে অক্ষুন্ন রেখেছেন। এছাড়া ডান বামের সমন্বয়ে অপূর্ব সমন্বয়ও সাধিত হয়েছে এই সম্মেলনে। কমিটির মধ্যে ধারাবাহিক নেতৃত্বের ক্রমবিকাশ ঘটায় নতুন করে জেলার রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক এই সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল হুদা মুকুটকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান সহ-সভাপতি জননেতা নোমান বখত পলিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেত্রীর নির্দেশেই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।
পাশাপাশি বর্তমান সভাপতি বর্ষীয়াণ রাজনীতিবিদ ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনকে জাতীয় কমিটির সদস্য ঘোষণা দেন তিনি। ঘোষণার আগে আলহাজ্ব মতিউর রহমান সম্পর্কে কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী আলহাজ্ব মতিউর রহমান সাহেবকে সম্মান করেন, তিনি নেত্রীর ঘোর বিশ্বস্থ লোক। আমরাও তাকে স্যালুট করি।
শনিবার (১১ ফেব্রোয়ারী) বিকেল ২টায় স্থানীয় সরকারী জুবিলীউচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন। দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন, আলহাজ্ব মতিউর রহমান সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ, সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এমপি ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। দলের শীর্ষস্থানীয় এ পদটিতে সিলেট বিভাগের ৩ নেতা মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ এ পদে মূল্যায়ন করা হলো আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে।
জাতীয় কমিটির সদস্য পদটিও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এ পদে অতীতে সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও দলীয় সাধারণ সম্পাদক আয়ূব বখত জগলুল দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে আস্থাভাজন ঘনিষ্ট ছিলেন। এ পদে ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনকে মূল্যায়ন করেছেন নেত্রী শেখ হাসিনা।
তবে শনিবারের সমাবেশে এবং অতীতের সকল সম্মেলনেই সবচেয়ে বেশী লোক যিনি জড়ো করে থাকেন তিনি হচ্ছেন জেলা আওয়ামীলীগের আরেক জেষ্ট সহ-সভাপতি জননেতা মুহিবুর রহমান মানিক এমপি। যিনি একজন সফল জননেতা থেকে তিলতিল শ্রম সাধনার মাঝে এখন গণমানুষের নেতায় পরিণত হয়েছেন। তাকে উপযুক্ত মূল্যায়ন করা হতে পারে কেবল দলটির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ প্রদান করলে। এমন বক্তব্যও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের।
শেষ পর্যন্ত সর্বাধিক গ্রহনযোগ্য ও পরীক্ষিত মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠণ করা হলে অনায়াসে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হবে এমন প্রত্যাশা সকল নেতাকর্মীদের। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনের সঞ্চালনায় সভায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
ঘোষিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি দুজনের নাম বলে যাবো। পকেটের লোক দিয়ে কমিটি গঠণ করবেননা। ৪৫ দিনের মধ্যে সকলের মতামত নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন। সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ঢেউ দেখে ওবায়দুল আনন্দে উচ্ছসিত ও অভিষিক্ত হন। হঠাৎ করেই তার মুখ দিয়ে বের হয়ে যায় একটি কবিতা। শেখ হাসিনার সরকার আবারও দরকার শ্লোগান দিয়ে তিনি বলেন,আবার আসিবো ফিরে, সুখে দু:খে ঢেউ খেলাবো সুরমা নদীর তীরে।