টাইগারদের স্বপ্নের প্রথম টেস্ট জয়
বাংলাদেশ প্রথম কবে টেস্ট খেলতে মাঠে নেমেছিল? স্মৃতির পাতা উল্টে ফিরে যান ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্টে পা রাখে টাইগাররা। তবে প্রথম জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে চার বছরেরও বেশি সময়। স্বপ্নের টেস্ট জয়টা আসে আজকের এইদিনে। ২০০৫ সালের ১০ই জানুয়ারি পেয়েছিলো বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ। যে স্বাদ স্মৃতিতে আজীবন থাকবে চিরঅম্লান। এই স্বাদ ভুলার নয়, এই স্বাদ ভুলে যাবার নয়! অভিষেক টেস্ট থেকেই অপেক্ষা এমন একটা স্বাদের। প্রয়োজন একটা জয়ের যে জয়ের আনন্দে ভাসবে দেশবাসী। একটা সময় অপেক্ষারা ফুরিয়ে যায় স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়ে আনন্দে ভাসায় আমাদের।
প্রথম জয়ের আগে খেলা হয়ে গেছে ৩২ টেস্ট। তবে এ ৩২ টেস্টে বলার মত সাফল্য ছিলো ৩ টি ড্র। এতগুলো ম্যাচ অপেক্ষা করতে হতো না। জয় আসার সম্ভাবনা জেগেছিলো আরও আগেই। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেইদিন বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে হেরে গিয়েছিলো মাত্র ১ উইকেটের ব্যবধানে। তবে অপেক্ষা বেশিদিন করতে হয় নি। স্বপ্নের দিনটা নিকটেই ছিলো। স্বপ্ন জয়ের ১৩ বছর পূর্তি আজ। ১৩ বছর আগে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ২ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২২৬ রানের বিশাল জয়ের ম্যাচে অবদান ছিলো অনেকের। সবাই ভালো পারফরম্যান্স করলে জয় আসবেই এটা ছিলো যেন তারই প্রমান।
প্রথম ইনিংসে ফিফটি করেছিলেন ৪ জন। এদের মধ্যে দুইজন আবার আউট হয়েছিলেন সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে। নার্ভাস নাইন্টিনের শিকার ছিলেন হাবিবুল বাশার। তিনি আউট হয়েছিলেন ৯৪ রানে আর রাজিন সালেহ ৮৯ রানে। বর্তমান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার ব্যাট থেকেও এসেছিলো ৪৮ রান। মোহাম্মদ রফিকের ব্যাট থেকে আসে ৬৯ রান আর নাফিস ইকবাল খেলেছিলো ৫৬ রানের এক ইনিংস।
দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন এনামুল হক জুনিয়র। তিনি ৬টি উইকেট শিকার করেন। মূলত এনামুল হক জুনিয়রের দ্বিতীয় ইনিংসের ৬ উইকেটই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিলো স্বপ্নের জয়। এনামুল হক জুনিয়র একাই সেদিন ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং ইনিংস। দুই ইনিংস মিলিয়ে রফিকের উইকেট ছিলো ৫ টি, মাশরাফির সংগ্রহেও ছিলো ৫ টি উইকেট। তাপস বৈশ্য নিয়েছিলেন ৩ টি উইকেট। তখনকার সময়ে বাংলাদেশ ছিলো সবচেয়ে নবীন টেস্ট দল। বর্তমানে বাংলাদেশ টেস্টেও নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মত দলকে হারিয়েছে। সাফল্য ব্যর্থতার হিসাবে ব্যর্থতা বেশি হলেও বর্তমান আশা জাগাচ্ছে বাংলাদেশ টেস্ট দল। অদূর ভবিষ্যতে স্বপ্নের মত অনেক দূর যাবে বাংলাদেশ এটাই প্রত্যাশা।