অদিতি খান্না, যুক্তরাজ্য-যুক্তরাজ্য সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ভোটদান বিধি পাল্টে গেল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকীর দাবির প্রেক্ষিতে। এখন থেকে গর্ভবতী সংসদ সদস্যরা শারীরিকভাবে হাউসে উপস্থিত হতে না পারলেও, প্রতিনিধির মাধ্যমে সংসদীয় ভোট প্রদান করতে পারবেন। একে বলা হচ্ছে প্রক্সি ভোটিং।. হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে কমন্সের সদস্য নির্বাচিত হওয়া টিউলিপ সন্তান প্রসবের জন্য তার ভোটাধিকার প্রশ্নে আপোষ করতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সের নিয়ম, সংসদ সদ্যকে শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে ভোট দিতে হবে। তাই নির্ধারিত সিজারিয়ান অপারেশন বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গত ১৫ জানুয়ারি হুইল চেয়ারে করে কমন্সে যান ভোট দিতে। ওই দিন ব্রেক্সিট কার্যকরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তিটি পাসের জন্য ভোটাভুটি হয়েছিল।  টিউলিপের সিদ্ধান্ত তখন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছিল। বিধি পরিবর্তনে টিউলিপ সিদ্দিকীর দাবির প্রেক্ষিতে এ সপ্তাহেই কমন্সে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। সদ্য বাবা-মা হওয়া সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে এক বছরের জন্য প্রক্সি ভোটিং চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এমন সংসদ সদস্যরা তাদের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য অপর একজন সংসদ সদস্যকে মনোনীত করতে পারবেন।
টিউলিপ সিদ্দিকীর সন্তানের নাম ‘রাফায়েল মুজিব সেইন্ট জন পার্সি।’ প্রক্সি ভোটিংয়ের বিধান পরিবর্তনের সূত্রে ছয় দিন বয়সী রাফায়েলের নাম ইতোমধ্যেই ঢুকে গেছে হাউস অব কমন্সের নথিতে। প্রক্সি ভোটিংয়ের বিধান পরিবর্তনকে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ আখ্যায়িত করেছেন টিউলিপ। এক টুইটার বার্তায় তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘২০১৫ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই আমি প্রক্সি ভোটিংয়ের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু তখন আমাকে অনেকেই বলেছিলেন, চেষ্টা করে লাভ হবে না। কমন্সের বিধি পাল্টাবে না। কিন্তু আজ সে বিধি পাল্টেছে। এখন থেকে নতুন বাবা-মা হওয়া সংসদ সদস্যরাও ভোট দিতে পারবেন।’ টিউলিপের প্রচেষ্টা সাধুবাদ কুড়িয়েছে তার নারী সহকর্মীদের। লেবার পার্টির এমপি জেস ফিলিপস হুঙ্কার দিয়েছেন, ‘পিতৃতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী, জুলুমবাজ, পুরাতন মানসিকতার’ বশবর্তী হয়ে যদি কেউ এই বিধির বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ‘নারীবাদীদের আর্মি’ দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে।  লেবার পার্টির নেতা হ্যারিয়েট হারম্যান বলেছেন, ৩১ বছর অনেক বেশি দীর্ঘ সময় তার জন্য। তারপরও তিনি অনেক খুশি এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে।

 
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn