ডিসেম্বরেই বাদাঘাটে স্থানান্তরিত হবে কারাগার : অর্থমন্ত্রী
আগামী ডিসেম্বরেই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার বাদাঘাটে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ডিসেম্বরে বাদাঘাটে নির্মানাধীন কারাগার উদ্বোধন করা হবে বলেও জানান তিনি। শনিবার দুপুরে বাদাঘাট এলাকায় নির্মানাধীন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন শেষে তিনি এমন কথা জানান। পরিদর্শনে গিয়ে অর্থমন্ত্রী গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। এরআগে সকালে নগরীর নাইওরপুলে একটি ফোয়ারা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশে রেমিটেন্স (প্রবাসী আয়) কমার পেছনে দুটি কারণের কথা জানান অর্থমন্ত্রী মুহিত। প্রবাসে বাংলাদেশেীরা স্থায়ী হয়ে যাওয়া এবং অধিক ফির কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ কমছে বলে মনে করনে তিনি। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ফি কমানোরও ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
অপরদিকে, দেশে জমির সরকারী মূল্য কম হওয়ায় অর্থপাচার বেড়েছে বলে মন্তব্য তাঁর। এজন্য জমির দাম বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, দুই কারণে রেমিটেন্স কমতে পারে। প্রথমত, যাঁরা বিদেশে থাকছেন, তাঁদের অনেকেই সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রক্রিয়া করছেন। দ্বিতীয়ত, তাঁদের একটি অভিযোগ আছে, রেমিট্যান্স পাঠানোর ফি অনেক বেশি। এজন্য ফি কমিয়ে আনার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। দ্রুতই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এসময় অর্থপাচার রোধে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মুহিত বলেন, পাচার সারা দুনিয়াতেই হয়। তবে পাচারের হার আমাদের একটু বেশি। এর জন্য আমরাও দায়ী। আমরা এখানে জমির সরকারি মূল্য কমিয়ে রেখেছি। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কেউ এক কোটি টাকার জমি বিক্রি করলে সেখানে সরকারি দাম ৩০ লাখ, বাকি ৭০ লাখ কালোটাকা হয়ে যায়। তবে পাচার বন্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পাচাররোধে দেশের জমির বর্তমান সরকারি দাম বাজার দর অনুযায়ী পরিবর্তনের চিন্তা ভাবনা করছে সরকার। খুব শিগগির জমির সরকারি দাম বাড়িয়ে বাজারদর করা হবে। এ সময় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. একে আবুল মোমেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ারসহ আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে (সুইস ব্যাংক) বাংলাদেশি নাগরিকদের জমা টাকার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এক বছরে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৪০ দশমিক ৭২ শতাংশ। সুইস ব্যাংকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশিদের জমার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্র্যাংক। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ৯০ টাকা হিসাবে)। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালে তা ছিল ৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে প্রায় ২ বছর ধরে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি নিম্নমুখী। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমেছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। গত ৬ বছরে এটিই সর্বনিম্ন।