আল-হেলাল-

সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদী বালু-পাথর মহালে অবৈধভাবে নদীর প্রতিবেশ ও পরিবেশ ধ্বংসকারী ড্রেজার-বোমা মেশিন (খনন যন্ত্র) দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ করার দাবী জানিয়েছে জেলা পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ। রবিবার দুপুর ১২টায় এ দাবীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের আহবায়ক জসীম উদ্দিন দিলীপ ও যুগ্ম আহবায়ক এ.কে.এম আবু নাছার বলেন,বালু-পাথর মহালটিতে বিগত প্রায় ৫/৬ বৎসর যাবৎ অবৈধভাবে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলনের কারনে নদীর প্রতিবেশ ও পরিবেশের অবস্থা মারাত্মক আকার ধারন করেছে। যে নদীটির গড় গভীরতা ছিল প্রায় ৩ থেকে ৫ ফুট এবং গড় প্রশস্ততা ছিল ২শত ফুট, সেই নদীটির বর্তমানে গড় গভীরতা প্রায় ৬০ ফুট এবং গড় প্রশস্ততা প্রায় ১ কিলোমিটার আকার ধারন করেছে। যার ফলে অসংখ্যা ঘরবাড়ি, মসজিদ, বিদ্যালয়, হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যে, অবৈধভাবে বালু পাথর উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের উদ্দ্যোগে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দ্যেশে, বিভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ,মানববন্ধন,স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করা সহ স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত বিভিন্ন কার্যালয়ে আবেদন পত্র প্রেরণ,পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা এবং সর্বোপরি মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা স্বত্ত্বে ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু দায় সাড়া (দায় এড়ানো) পদক্ষেপ ব্যাতীত কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ আজ অবধি পরিলক্ষিত হয় নি। সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার পর গত ১ লা জুলাই থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ইজারাদারের প্রত্যক্ষ মদদে পুরোদমে আবার ড্রেজার-বোমামেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন শুরু হয়েছে। কোন রহস্যজনক কারণে অবৈধ কাজটি আবার শুরু হলো তা জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে,স্থানীয় এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার রাজধানীর বাসায় পৌছে দেয়া হয়েছে প্রায় ৭০ লাখ টাকার আসবাবপত্র। উল্লেখ্য যে,ড্রেজার বা বোমামেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলনের কারনে সাধারণ শ্রমিকদের দ্বারা বালতি দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন সম্ভব হয় না। তাই হাজার হাজার অসহায় শ্রমিক বেকার ও নিদারুন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
তারা উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ইজারাদার ও অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনকারীদের চিহ্নিত করে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। স্মারকলিপির অনুলিপি খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর (ডিএমডি) পরিচালক,পরিবেশ অধিদপ্তর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের মহা-পরিচালক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী-পরিচালক,সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশ সুপারকে প্রদান করা হয়। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ধোপাজান বালু পাথর মহালের ইজারাদার কামরুজ্জামান দ্বারা বলেন,জেলা প্রশাসন ও বিজিবি প্রতিনিয়ত বোমা মেশিন আটক করে নদীর তীর কাটা বন্ধ করছে। আমরাও বোমা মেশিন দ্বারা বালু পাথর উত্তোলনের ঘোর বিরুধী।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn