ঢাবিতে নিয়োগ দেয়া হল সেই ছয়জনকে
ন্যূনতম যোগ্যতা নেই তাদের * বিজ্ঞাপনের বাইরে নিয়োগ আরও ৪
‘ন্যূনতম যোগ্যতা’ ছাড়াই ৬ জনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এ বিভাগে বিজ্ঞাপনের বাইরে আরও দু’জন এবং বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগে দু’জনকে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগে মোট নয়জন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। অথচ বিজ্ঞাপনে বিভাগটিতে সাতজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ এখানে বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত দু’জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিভাগটিতে যাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হল তাদের মধ্যে ছয়জনই শিক্ষক হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ করতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বিভাগটিতে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে চার বছর মেয়াদি বিবিএ এবং এমবিএ ডিগ্রিধারী হতে হবে। উভয় পরীক্ষায় সিজিপিএ ৪.০০-এর মধ্যে ৩.৭৫-সহ এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০-এর মধ্যে ন্যূনতম ৪.২৫ থাকতে হবে। অথচ নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কেবল হাজেরা আক্তার, ফাহমিদা মুস্তাফিজ এবং অনামিকা দত্ত ছাড়া বাকি ছয়জনই এ যোগ্যতা পূরণ করতে পারেননি। যোগ্যতা পূরণ না করেই যারা শিক্ষক হয়েছেন. তারা হলেন মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, মৌরি মেহতাজ, আসমিনা আক্তার, পল্লবী বিশ্বাস, কাজী মো. জামশেদ এবং একরামুল হুদা।
অন্যদিকে বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগে দুটি খালি পদের বিপরীতে চারজনকে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। আবার যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কমপক্ষে দু’জন ফলের দিক থেকে প্রথম চারজনের মধ্যেও নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। দুটি বিভাগে বিজ্ঞাপনবহির্ভূত চারজন শিক্ষক নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কারণ ২০১৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেটের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ‘এখন হইতে সকল বিভাগ/ইন্সটিটিউটে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত একজনের বেশি নিয়োগ করা যাইবে না। বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত নিয়োগের বিষয়ে সিএন্ডডি কমিটির সুপারিশ সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হইবার পূর্বেই পাঠাইতে হইবে’।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বিল্লাল হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি পদোন্নতির জন্য পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহার করিনি। আর এখনও আমার পিএইচডি শেষ করতে আট মাস সময় আছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। সিনেট নির্বাচনে আমাদের উপাচার্য বিরোধী অবস্থানের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ অপর এক অভিযুক্ত শিক্ষক ড. রউফ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক যুগান্তরকে বলেন, ‘পদ শূন্য থাকায় সিলেকশন বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সিলেকশন কমিটির বিষয়। তবে বিজ্ঞাপনে শর্তশিথিলের বিষয়টি উল্লেখ ছিল।’ অভিযুক্ত শিক্ষকের অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব বলছেন।’