ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় প্রেস (ছাপাখানা)  থেকে। ঢাবির ‘ঘ’ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপা হতো রাজধানীর ইন্দিরা রোডের একটি প্রেসে। আর ওই প্রেসের কর্মচারী খানা বাহাদুরের মাধ্যমেই প্রশ্নপত্র  ফাঁস হতো। আর সরবরাহ করতো নাটের ও পাবনা জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা রকিবুল হাসান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৭ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত খান বাহাদুরসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ দমন শাখা সিআইডি। এদের মধ্যে ৫ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, ১৩ ডিসেম্বর বুধবার জামালপুর থেকে সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুরকে।
 
তিনি বলেন, খান বাহাদুরকে গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে এই চক্রের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। এই চক্রের ‘শীর্ষে’থাকা পাবনা জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা রকিবুল হাসান ইসামীও পুলিশের হেফাজতে আছেন উল্লেখ করে নজরুল জানান, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গত তিন মাসে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, বাহাদুরের সঙ্গে সাইফুল ইসলামের পরিচয় ছিল। সাইফুলের সঙ্গে পরিচয় ছিল রকিবুল হাসান ইসামীর। মূলত এই তিনজন প্রশ্ন  বিভিন্ন জায়গায় ছড়াতেন। এই তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, এর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ডিভাইস সাপ্লাই পদ্ধতিতে ঢাবিতে ভর্তি হওয়া ৭  শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রক্টোরিয়াল টিমের সহায়তায় গ্রেফতার তরা হয়। আর গত ৭ ডিসেম্বর  রাজধানীর জিগাতলা থেকে  গ্রেফতার করা ডিভাইস সাপ্লাই ও প্রশ্ন ফাঁস করা  গ্রুপের অন্যতম অন্যতম নাজমুল হাসান নাঈমকে।  পরে ৯ ডিসেম্বর  রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল এলাকা থেকে বনি ইসরাইল ও বিনোদপুর এলাকা থেকে  মারুফকে গ্রেফতার করা হয়। বনি ও মারুফ দুজনই ছাত্র সংগ্রহ  ও তাদের তথ্য সংগ্রহ করত রকিবুল হাসান ইসামী।
 
তিনি আরো  বলেন, রকিবুল হাসান ইসামী নাটোর ও পাবনা জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা। গত ১১ ডিসেম্বর রাজশাহী তার বড়ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসার সামসুজ্জোহা ও গুরুদাশপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদে হোসেনের জিম্মা হতে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন রকিবুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রকিবুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৩ ডিসেম্বর  জামালপুর থেকে সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে প্রত্যেক  শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই  থেকে সাত লাখ টাকার লেনদেন হতো উল্লেখ করে মোল্যা নজরুল ইলালাম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে গত ৭ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন কারাগারে, তিনজন রিমান্ডে এবং ২ জন গ্রেফতার আছেন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn