ঢাবির ফেসবুক পেজে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নতুন বিতর্ক: তিন ধাপে সংশোধন
সাইফুল ইসরাম খান, ঢাবি।।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মারক গ্রন্থে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করায় কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। গত বছরের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত ওই স্মারক গ্রন্থ পরে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল রেজিস্টার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে। তোপের মুখে পড়েছিলেন উপাচার্য।
এবার ৫০তম সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে ( https://web.facebook.com/univdhaka.ac.bd/ ) দেওয়া ভিডিওসহ একটি স্ট্যাটাসে গর্বিত ছাত্রদের বর্ণনা দিতে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বাদ দেওয়া হয় জাতির জনক খেতাবও। পরবর্তীতে তিন ধাপে ওই স্টাটাসটি সংশোধন করে কর্তপক্ষ। শুক্রবার রাতে দেওয়া ওই স্টাটাসটি পটকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল-
“অজস্র বাঁধা পেরিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩-এ। তিলে তিলে বাড়তে বাড়তে আজ আমরা ৫০তম সমাবর্তনের দোরগোড়ায়। আমাদের এই যাত্রায় আমরা সাক্ষী হয়েছি ‘৪৮, ‘৫২, ‘৬২, ‘৬৯, ‘৭১ এবং ‘৯০-এর। আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি ডঃ মুহাম্মাদ ইউনূস, সত্যেন বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মত ছাত্রদের ধারণ করতে পেরে। আমাদের এই পথচলায় অবদান আছে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। এবং, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের। আমাদের সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা তাঁদেরকে। #৫০তমসমাবর্তন”
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে স্ট্যাটাসটি দেয়ার পরে কমেন্টে এর নিন্দা জানাতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। নানা মহল থেকে ওঠে প্রশ্ন, ‘প্রশাসনে কি তবে সত্যিই জামায়াত ভর করছে?’ ক্যাম্পাসে ওই স্টাটাস নিয়ে নানা মহলে আলোচনা ওঠার পর রাত ১টার দিকে স্ট্যাটাসটি সংশোধন করে কর্তৃপক্ষ। সংশোধিত স্টাটাসে জাতির জনকের নাম গর্বিত ছাত্র হিসেবে প্রথমে দেয়া হয়। যোগ করা হয় জাতির জনক উপাধিও। প্রথম সংশোধন করার পর স্টাটাসটি ছিল এরকম-
“অজস্র বাঁধা পেরিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩-এ। তিলে তিলে বাড়তে বাড়তে আজ আমরা ৫০তম সমাবর্তনের দোরগোড়ায়। আমাদের এই যাত্রায় আমরা সাক্ষী হয়েছি ‘৪৮, ‘৫২, ‘৬২, ‘৬৯, ‘৭১ এবং ‘৯০-এর। আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সত্যেন বস, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মত ছাত্রদের ধারণ করতে পেরে। আমাদের এই পথচলায় অবদান আছে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। এবং, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের। আমাদের সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা তাঁদেরকে। #৫০তমসমাবর্তন”
প্রথম সংশোধনে বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর নাম লেখা হয় ‘সত্যেন বস’ এবং শুরু থেকেই নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় শিক্ষার্থী হিসেবে। ফলে স্টাটাসটি দ্বিতীয়বার সংশোধন করে কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় সংশোধন- “অজস্র বাঁধা পেরিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩-এ। তিলে তিলে বাড়তে বাড়তে আজ আমরা ৫০তম সমাবর্তনের দোরগোড়ায়। আমাদের এই যাত্রায় আমরা সাক্ষী হয়েছি ‘৪৮, ‘৫২, ‘৬২, ‘৬৯, ‘৭১ এবং ‘৯০-এর। আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রাহমান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মত ছাত্র; সত্যেন বসুদের মত শিক্ষকদের ধারণ করতে পেরে। আমাদের এই পথচলায় অবদান আছে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। এবং, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের। আমাদের সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা তাঁদেরকে। #৫০তমসমাবর্তন”
দ্বিতীয় বার সংশোধিত স্ট্যাটাসে সত্যেন বসুকে শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নতুন করে যোগ করা হয়েছে কবি শামসুর রাহমানের নাম। অথচ নাম রাখা হয়নি ঢাবির শিক্ষার্থী ও পরবর্তীতে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হুয়ামূন আহমেদের নাম। সদ্য প্রায়ত সৈয়দ শামসুল হকের নামও। বার বার ভুল করা নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতভর চলে আলোচনা-সমালোচনা। এরপর তৃতীয়বারের মত সংশোধন ওই স্টাটাসটি সংশোধন করে কর্তৃপক্ষ। তৃতীয়বার সংশোধন হওয়ার পর স্টাটাসটি ছিল এরকম- “অজস্র বাঁধা পেরিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩-এ। তিলে তিলে বাড়তে বাড়তে আজ আমরা ৫০তম সমাবর্তনের দোরগোড়ায়। আমাদের এই যাত্রায় আমরা সাক্ষী হয়েছি ‘৪৮, ‘৫২, ‘৬২, ‘৬৯, ‘৭১ এবং ‘৯০-এর। আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রাহমানের মত ছাত্র; সত্যেন বসুদের মত শিক্ষকদের ধারণ করতে পেরে। আমাদের এই পথচলায় অবদান আছে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। এবং, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের। আমাদের সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা তাঁদেরকে। #৫০তমসমাবর্তন”
তৃতীয় সংশোধনে জন্ম দেওয়া হয়েছে নতুন বিতর্কের। সংশোধনে বাদ দেয়া হয়েছে দেশের প্রথম নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম। মনসুর আহমেদ নামে একজন মন্তব্য করেছেন, “তিনবার এডিট এবং ডঃ ইউনুস হাওয়া?”
ইমতিয়াজ সোহেল নামে ঢাবির এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পড়েন নাই? আমাদের এই আমলে আর কি কি অবমাননা দেখতে হবে?’