হলের ভেতরে দিনের বেলা অথবা রাতের বেলা সালোয়ার এর ওপর গেঞ্জি পরে ঘোরাফেরা ও এ পোশাকে হলের কার্যালয়ে কাজের জন্যে ঢোকা যাবে না মর্মে এক নোটিশ জারি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে হলে থাকা ছাত্রী সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।নোটিশে বলা হয়েছে, হলের ভেতর দিন বা রাত হোক, কখনোই ছাত্রীদের অশালীন পোশাক (সালোয়ারের ওপর গেঞ্জি) পরা যাবে না। এ পোশাকে হলের কার্যালয়ে কোনও কাজের জন্য ঢোকা যাবে না। কেউ যদি তা করেন, তবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে হল কর্তৃপক্ষ বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেবে।নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করা কবি সুফিয়া কামালের নামে এহলের প্রতিষ্ঠা হয় ২০১২ সালে। কার্জন হলের পাশে প্রায় সাত একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এ হলে আবাসিক ছাত্রীরা হলে ঢোকেন ২০১৩ সালে। বর্তমানে হলের আবাসিক ছাত্রীসংখ্যা দুই হাজার এবং অনাবাসিক ছাত্রীসংখ্যা ৩ হাজার ৩০০। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলটি উদ্বোধন করেছিলেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক ছাত্রী হল কর্তৃপক্ষের এধরনের নোটিশকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বলেন, প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করে দিতে পারে না কে কোন পোশাক পরিধান করবে। এটা উচিত হয় নি। হল প্রভোস্ট সাবিতা রেজওয়ানা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগে তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায় নি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
সাংবাদিক প্রভাষ আমিন ফেসবুকে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় লিখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে আমি মোটেই অবাক হইনি। কারণ গত কয়েকবছরে দেশে এমন সব ঘটনা ঘটেছে, আমার অবাক হওয়ার ক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে। কিছুদিন পর যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে হিজাব বা বোরখা বাধ্যতামূলক করা হয়, তাতেও আমি অবাক হবো না, আগেই বলে রাখছি।আইনজীবী ও অনলাইন এক্টিভিস্ট রাজেশ পাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক ছাত্রীদের জন্য নোটিশের ছবি শেয়ার করে বিদ্রূপ করে লিখেছেন,ভালো তো , ভালো না? তাঁর ওই পোস্টে অনেকেই সমালোচনা করেছেন ঢাবির রোকেয়া হলের এসিদ্ধান্তকে। গিরিশ বাড়ৈ নামের একজন লিখেন, হলের মধ্যে ও তাদের বোরকা পরে থাকা উচিত নিশ্চয়ই। অনিক ভট্টাচার্য শচিন নামের একজন লিখেন, অবশ্যই বোরকা জাতীয় পোশাক হিসেবে সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করা সময়ের ব্যাপার।এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রীদের পোশাক পরিধান সংক্রান্তের বিষয়টি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অস্বীকার করা হয়েছে।কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অত্র হলের মেয়েদের পোশাক পরিধান সংক্রান্ত একটি বিকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নোটিশ অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ সাইটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উক্ত বিকৃত নোটিশটি হল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত নয়। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn