ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর কেন্দ্র করে গত শুক্রবার থেকে শুরু করে তিন দিনে চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ইসলামী ও বামপন্থী দলগুলোর আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অজ্ঞাতনামা ৮ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।

দেশজুড়ে এই সংঘর্ষে অন্তত ১৪ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা বিনষ্ট করা হয়েছে। তবে সংঘর্ষে নিহত কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অন্যদিকে, পুলিশের দায়ের করা মামলায়ও নেই কোনো হেফাজতকর্মীর নাম।

শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে আন্দোলনে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এ সময় একটি পুলিশ স্টেশনেও ভাঙচুর চালান তারা। এ সংঘর্ষে হেফাজতের পাঁচ কর্মী নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

তবে একই দিনে ঢাকার বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জনের নামে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ২৬ মার্চ পল্টন পুলিশ স্টেশনের সাব-ইনস্পেক্টর শামীম হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। হাটহাজারির ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার ও রোববার দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয় হেফাজত।

দুদিনই ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তাণ্ডব চালিয়েছে হেফাজত। এদিকে,  রোববার ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আন্দোলনের সময় বিজিবির সঙ্গে হেফাজতের সংঘর্ষে সংগঠনটির আরও পাঁচ কর্মী নিহত হন। এদিন তারা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার একটি রেলস্টেশনে হামলা করেন। সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার অজ্ঞাতনামা ৬৫০০ জনের নামে মামলা করে পুলিশ।

রোববার হেফাজতে ইসলাম আরও সহিংস রূপ ধারণ করে। সরকারি-বেসরকারি ভবনে হামলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস-ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করেন তারা। হেফাজতে ইসলামের এ তাণ্ডব ও হরতালের ফলে দেশের পরিবহন খাতে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক হেফাজতকর্মী আহত হন এবং নতুন করে সংঘর্ষে আরও তিন কর্মী নিহত হন নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হেফাজত কর্মীদের অবস্থান। ছবি: টিবিএস

রোববার বাংলাদেশ আনসার, বিজিবি ও ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা ৬০০ ব্যক্তির নামে দুটি মামলা দায়ের করে। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সদর থানার সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ আনিসুল রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশে বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করতে ও জনগণের জানমালের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে শিগগিরই বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর কেন্দ্র করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছিল। সূত্র : দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn