এম. এ রাজ্জাক ::  তাহিরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল আবারো প্লাবিত হয়েছে।  টানা দুই দিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ৫০ গ্রামটি প্লাবিত হয়েছে । অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের স্রোতে উপজেলার আনোয়ারপুর ব্রীজের পূর্ব পাশে তাহিরপুর–সুনামগঞ্জ রাস্তার প্রায় ২ কিলোমিটার ভাঙ্গন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা নামক স্হানের ১০০ মিটার ব্রীজের পূর্ব পাশ, বাঘমারা পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা পানির নিচে ডুবে গেছে।  ফলে সোমবার বিকাল থেকে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাত আটটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলা সদরের  সাথে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভপুর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে । সড়কের দুইপাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে। অপরদিকে পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রাম সংলগ্ন বাদাঘাট-সোহালা সড়ক ভাঙ্গনের ফলে বাদাঘাট বাজারের সাথে অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তাহিরপুর সীমান্ত সড়কটি পাহাড়ি ঢলে বেশ কয়েকস্হানে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।  সীমান্তের বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়ার তীরবর্তী ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা ১২ টা থেক মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে । এদিকে তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়া দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে নামার ফলে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত রাস্তার বারেকটিলা থেকে মহিষখলা পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমনকি সীমান্ত নদী যাদুকাটায় ও মাহারাম নদীর বালি পাথর উত্তোলনকারী প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। উপজেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় একাদিক সূত্রে জানা যায় , টানা দুইদিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার দক্ষিণকুল, মাহতাবপুর, খাশতাল, চড়গাও, রাজধরপুর, রামজীবনপুর, সাহেব নগর, পৈন্ডুপ, গোপালপুর, মারালা, নোয়ানগর, নোয়াগাঁও, ইক্রামপুর, জগদীশপুর, সাহসপুর, সুলেমানপুর, উমেদপুর, আনন্দনগর, পাটাবুকা, ভবানীপুর, দুমাল, লামাগাঁও, বিনোদপুর, ইন্দ্রপুর, পানিয়াখালী, জয়পুর, গোলাবাড়ী, ছিলানি তাহিরপুর, ভোরারঘাট, কামালপুর, জামালপুর, মাটিয়ান, তরং, নয়াবন্ধ, বালিয়াঘাট, দুধের আইউটা, জামলাবাজ, টাকাটুকিয়া, রসুলপুর, কাউকান্দি, কামারকান্দি, ধরুন্দ, কাঞ্চনপুর, ইউন‚ছপুর পাতারগাঁও, মাহতাবপুর, বড়দল সহ প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার উজান এলাকার আমন ধানের প্রায় দু’শ একর জমির বীজতলা ও শাকসব্জির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম জানান, টানা দুইদিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে পানি এসে উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সীমান্তবর্তী পাহাড়ী চড়ার তীরবর্তী ঘরবাড়ি পাহাড়ী ঢলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ মানববেতর জীবনযাপন করছেন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn