তাহিরপুরে দুইধর্মের ১৫ লক্ষাধিক মানুষের মিলনমেলা
তথ্য নিয়ে জানাযায়,প্রতি বছরের ন্যায় ৩দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে দুইধর্মের দুই উৎসব। মুসলমানদের ৩৬০আওলিয়ার অন্যতম ছিলেন হযরত শাহ আরেফিন (রঃ)। সবাই জানে শাহ আরোফিন (রঃ) একজন জিন্দা পীর। তিনি ভারতের মেঘালায় পাহাড়ের বড়বড় পাথরের গুহায় বসে আল্লাহ ইবাদত করতেন। ওইটাই ছিল তার একমাত্র আস্তানা,বাংলাদেশে কোন আস্তানা নেই। কিন্তু ভারতের সেই আস্তানায় ভক্তদের যেতে দেয় না ভারতীয় বিএসএফ। তাই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের লাউড়েরগড় এলাকায় জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন স্থানে শাহ আরোফিন (রঃ) এর আস্তানা তৈরি করে সেখানেই ওরস পালন করা হয়। সেখানে বক্তরা বাউল,জারী,সারি,মারফতি,আদ্ধাতির্ক,বাউল শাহ আব্দুল করিম,হাসন রাজা,রাধারমন সহ বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া গান পরিবেশন করে গানে গানে মুখরীত করে তুলে চারপাশ। অন্য দিকে ১৫১৬খিষ্টাব্দে পনাতীর্থের সূচনা করেন মহাপুরুষ শ্রীমান অদ্বৈত আর্চায প্রভু। তার জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নবগ্রামে। কিন্তু সেই গ্রাম যাদুকাটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে বহু বছর আগেই।
এজন্য নদীর তীর সংলগ্ন রাজারগাঁও গ্রামে অদ্বৈত আর্চায মন্দির ও আখড়া তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছরের চৈত্র মাসে এই তৃথীতে গঙ্গাস্নানের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে হিন্দু ধর্মাবলাম্বীরা যাদুকাটা নদীতে ছুটে আসেন। শাহ আরোফিন (রঃ) এর ওরস ও পনাতীর্থকে কেন্দ্র করে যাদুকাটা নদীর দুই তীর রাজারগাঁও ও লাউড়েরগড়ে বসে বিরাট বারুনী মেলা। মেলায় লক্ষলক্ষ দোকানপাট বসে। এ সময় পূণার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে প্রায় ২৩কিলোমিটার দৈর্ঘ্য যাদুকাটা নদীর চারপাশ। মেলাকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠে বিভিন্ন শ্রেণীর চাঁদাবাজ চক্র। চোরাচালানীরা ওপেন বিক্রি করে মদ,গাজা,হেরুইন ও মেলা বসায় জুয়ার বোর্ড। এছাড়াও চুরি-ডাকাতি,ছিন্তাই,চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গনধৌলাইয়ের শিকার হয় চাঁদাবাজরা এছাড়াও বিভিন্ন রকমের অনৈতিক ঘটনা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি,চোরাচালানী,মদ,গাজা ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মামলার চিহ্নিত আসামীদের সহযোগীতায় অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসীর। বাদাঘাট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন ও উপজেলার সচেতন মহল দাবী জানান-এবার দু-ধর্মের দুটি মেলায় সকল প্রকার অবৈধ কার্মকান্ড প্রতিরোধে প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে কার্যকর প্রদক্ষেপ নেবেন। তাহিরপুর থানার অফিসার্স ইনচার্য নন্দন কান্দি ধর জানান,মেলা ও পর্নতীর্থ এলাকায় ও আসা-যাওয়ার পথে সকল প্রকার অনিয়ম ও আইনশৃংখলা বজার রাখার সবোর্চ্চ চেষ্টা করব। কোন অন্যায় কারীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামন কামরুল জানান-এবার দু-ধর্মের দুটি মেলায় আসা লোকজনের নিারাপত্তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেলায় কোন অন্যায় কেউ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন,প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মেলা উন্মুক্তো রাখা হয়েছে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্টানের নামে কেউ কোন প্রকার চাঁদা উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়ের উপর কড়া নজরদারীর জন্য পুলিশ,র্যাব ও বিজিবিকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বলা হয়েছে।