সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পেশাদার খুনি ভাড়া করে মাদকাসক্ত ছেলেকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার (২৩ জুন) রাতে বাবা মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এতথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। পুলিশ জানায়, গত ২১ মে তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহারাম নদীর পাড়ে মাহারাম গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (২৮) খুন হয়। খুনের ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের বাবা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে প্রতিবেশী আহসান হাবিব (২২), মো. সোলাইমান (২২) ও পাশের করইতলা গ্রামের তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াকে (২৮) আসামি করে খুনের মামলা দায়ের করেন। পরে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় এরা খুনের সঙ্গে জড়িত কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে পুলিশ সুরুজ মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে।
সুরুজ মিয়া পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, এই খুনের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। তিনি জানান, জাহাঙ্গীর আলম নেশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি তার পরিবারের লোকজনকে অত্যাচার করতেন। জাহাঙ্গীরের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে তার বাবা মোহাম্মদ আলী তাকে ও সেকান্দার আলী নামের আরেকজনকে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করেন। সুরুজ মিয়া এর আগে দুই খুনের মামলায় ১৭ বছর কারাগারে ছিলেন এবং সেকান্দার আলীও ডাকাতির মামলায় জেল খাটেন।
খুনের ঘটনার আগে সুরুজ মিয়া ৫০০ টাকা দেয়ার কথা বলে জাহাঙ্গীরকে মাহারাম নদীর পাড়ে ডেকে আনেন। জাহাঙ্গীরকে খুন করার পর সুরুজ মিয়া মোবাইলে তার বাবা মোহাম্মদ আলীকে জানান। গ্রেফতার সুরুজ মিয়া আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে খুনের সব তথ্য দেন। পুলিশ অপর খুনি সেকান্দার আলীকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তিনিও আদালতে ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বুধবার রাতে অভিযুক্ত বাবাকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিকেলে বিচারক খালেদ মিয়া ছেলে খুনের দায়ে গ্রেফতার বাবাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করা পেশাদার অপরাধী দিয়ে ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে খুন করিয়ে মোহাম্মদ আলী তার প্রতিবেশী মাহারাম গ্রামের আহসান হাবিব ও মো সোলাইমানকে এবং পাশের করইতলা গ্রামের তৌফিকুলকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে মোহাম্মদ আলীর জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১২০ বার