তাহিরপুর চাঁরাগাঁও সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ১৪লক্ষ টাকার পাথর পাচাঁর
তাহিরপুর:: তাহিরপুর উপজেলার চাঁরাগাঁও সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ১ হাজার মে.টন (৮শত ট্রলি) পাথর পাঁচার করার অভিযোগ উঠেছে। পাচাঁরকৃত পাথরের মূল্য প্রায় ১৪লক্ষ টাকা। আজ ২৬.০১.১৮ইং শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই পাথর পাচাঁর করা হয়। চোরাচালানীরা বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে মদ,গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, পাথর, কয়লা, মোটর সাইকেল,গরু ও অস্ত্র পাচাঁর করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন যাবত নামে-বেনামে লক্ষলক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করলেও এব্যাপারে তাদের বিরোদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা প্রশাসন। এব্যাপারে চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানায়,চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয় দিয়ে জঙ্গলবাড়ি গ্রামের আছালক মিয়ার ছেলে তোতা মিয়া,তার সহযোগী আলী হোসেন ও থানার সোর্স পরিচয় দিয়ে শাকিরুল মিয়া গং প্রতিদিনের মতো আজ ২৬.০১.১৮ই শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের ১১৯৫এর ৫এস পিলার সংলগ্ন চাঁরাগাঁও ছড়া এলাকা দিয়ে ভারত থেকে ৭৫টি ট্রলি দিয়ে ১হাজার মে.টন (৮শত ট্রলি) বল্ডার পাথর পাচাঁর করে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে কলাগাঁও গ্রামের সমসার হাওরপাড়ের পাথরঘাটা নামকস্থানে নিয়ে মজুত করে ওপেন বিক্রি করে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০গজ দূরে দুই দেশের লোকজন অবস্থান করার আইনগত নিয়ম থাকলেও এখানে বিজিবি ও তাদের সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানীরা তা মানছেনা। এর আগে গত ২৩.০১.১৮ইং মঙ্গলবার রাত ৯টায় লালঘাট গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে চিহ্নিত চোরাচালানী সোনা মিয়া ভারত থেকে অবৈধভারে কয়লা ও মদ পাচাঁর করার পর তার বাড়ি থেকে ৯ বোতল মদ আটক করলেও চোরাচালানী সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করেনি এবং তার বিরোদ্ধে মামলা দেয়নি। কারণ পাচাঁরকৃত ১ ট্রলি (৩২ফুট) পাথর থেকে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের নামে ৭০টাকা,বীরেন্দ্রনগর কোম্পানী কমান্ডারের নামে ৩০টাকা,তাহিরপুর থানার নামে ৫০টাকা,ইপি মেম্বার হাসান আলীর নামে ৫০টাকা,ঢাকা প্রধান কার্যালয়,বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে আব্দুর রাজ্জাক নিচ্ছে ৫০টাকা,চাঁদা উত্তোলনকারী সোর্সদের নামে ৩০টাকা,ডিবি পুলিশের নামে ২০টাকা ও সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের নামে ৫০টাকাসহ মোট ৩৫০টাকা হারে ৮শত ট্রলি থেকে সর্বমোট ২লক্ষ ৮০হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলে জানাগেছে। সেই সাথে ১ বস্তা কয়লা পাচাঁরের জন্য ১৫০টাকা,বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক হারে চাঁদা নেওয়াসহ ১টি গরু থেকে ৫হাজার টাকা,১টি মোটর সাইকেল থেকে ১০হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। আর এই চাঁদার টাকা উত্তোলন করে ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী তোতা মিয়া ও শাকিরুল মিয়া। এব্যাপারে ক্যাম্পের সোর্স আলী হোসেন বলেন,হাসান আলী মেম্বার ও তোতা মিয়া আমাকে বলেছে কয়টা ট্রলি দিয়ে পাথর পাছ হচ্ছে তার হিসাব রাখতে,আমি শুধু খাতায় হিসাব লিখে রেখেছি,এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবনা। বিজিবির সোর্স তোতা মিয়া বলেন,আমি যা করেছি বিজিবির নিদেশে করেছি,আপনার কিছু জানার থাকলে ক্যাম্প থেকে জানতে পারেন,এই ব্যাপারের আমার কিছু বলার নাই। চাঁরাগাঁও ও কলাগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী সাজুল হোসেন,তারা মিয়া,জীবন রহমান,ফিরোজ মিয়া,রবিন মিয়া,করিম উদ্দিনসহ আরো অনেকেই বলেন,সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানী তোতা মিয়া,আব্দুর রাজ্জাক ও শাকিরুল মিয়া গং গত ২মাসে চাঁরাগাঁও ও কলাগাঁও এর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অবৈধভাবে প্রায় ১কোটি টাকার পাথর ও কয়লাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে বিজিবি,পুলিশ ও সাংবাদিকের নামে লক্ষলক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে আঙ্গল ফুলে কলাগাছ হলেও তাদের বিরোধে আজ পর্যন্ত আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এব্যাপারে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মোনায়েম বলেন,আমার পরিচয় জানার দরকার নেই,আপনার যা বলার তাড়াতাড়ি বলেন,আমি এখন ব্যস্ত আছি। এই কথা বলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন,এরপর একাধিক বার কল করার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাথর পাচাঁরের ব্যাপারে জানতে বীরেন্দ্রনগর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার হাবিব এর সরকারী মোবাইল নাম্বারের বারবার কল করার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।