তাহিরপুর::তাহিরপুর উপজেলার প্রায় তিন লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গত একযুগের বেশি সময় ধরে সড়কটি মেরামত না হওয়া বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল দ‚রের কথা, পায়ে হেঁটেও চলা দায় হয়ে পড়েছে। তাহিরপুর উপজেলা থেকে বাদাঘাট ইউনিয়নের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। এই সড়কটি উপজেলার তাহিরপুর সদর, বালিজুড়ি, শ্রীপুর দক্ষিণ, শ্রীপুর উত্তর ও দক্ষিণ বড়দল, দক্ষিণ বড়দল, বাদাঘাটসহ ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী জন্য উপজেলা সদরে যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়াও এই সড়কটি দিয়ে লেগুনা, সিএনজি, মিনিট্রাক, লাইটেস, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন উপজেলা সদরে আসাসহ পর্যটনস্পট ও তিন শুল্কবন্দরে চলাচল করত। কিন্তু চলতি বছর পর পর ভয়াবহ ৫ম দফা বন্যার কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ শিকার হচ্ছেন সবাই। বর্ষাকালে হাওরপাড়ের সবাই নৌকাযোগে বাদাঘাট বাজারে আসা-যাওয়া করে। হেমন্তকালে সাধারণত হাওরপাড়ের লোকজন হেঁটে কিংবা মোটরবাইকে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু সড়কের এই বেহাল দশার কারণে শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটেও চলাচল করাও দুরূহ হয়ে পড়েছে। এখন অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কের হুসনারঘাট থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত ঘণ্টা খানেক সময় অপেক্ষা করে নৌকা দিয়ে পারাপার করা হয় মোটরসাইকেল ও যাত্রীদের।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বাদাঘাট বাজার থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে এনে তাহিরপুর উপজেলা সদরের বাজারে বিক্রি করেন। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে বর্তমানে তারা সবজি কিনে নৌকাযোগে তাহিরপুর বাজারে নিয়ে আসেন। এ কারণে লাভের বদলে ক্ষতি বেশি হচ্ছে তাদের। মোটরসাইকেল চালক হান্নান মিয়া জানান, তাহিরপুর বাদাঘাট গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্তমানে বেহাল অবস্থায় আছে। পেটের দায়ে যাত্রী নিয়ে চলাচল করি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এখন সবার গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাহিরপুর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সমির বলেন, এত দিন সবজি নৌকা দিয়ে এনে বিক্রি করছি। এখন পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে ১০-১৫ দিন পর আর নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের কম হলেও ৫ কিলোমিটার জায়গা ভাঙাচুরা অবস্থা রয়েছে। এ অবস্থায় সড়কটি চলাচলের উপযোগী না করলে ব্যবসা-বাণিজ্যের মারাত্মক ক্ষতি হবে। রাস্তায় চলাচলকারীদেরও খুব অসুবিধায় পড়তে হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হক জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে হাসপাতালের সামনের রাস্তা থেকে জয়নাল আবেদীন ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত ভাঙা। এসব স্থান ঢালাই করতে হবে। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবির বলেন, গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি জনদূর্ভোগ লাগবে চলাচলের জন্য খুব শিগগিরই মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ জানান, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই মেরামত করার ব্যবস্থা করা হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn