ত্রাণ দিলেই হাওরের সমস্যার সমাধান হবে না-আ.স.ম রব
আল-হেলাল-
সুনামগঞ্জ থেকে : স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ. স. ম আব্দুর রব বলেছেন, ঢাকায় যদি ফ্লাইওভার করা যায়, তাহলে সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চলের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও লাখ লাখ মানুষকে বাঁচাতে কনক্রিটের বাঁধ দিতে বাধা কোথায়। সুনামগঞ্জের হাওরে মাটির বাঁধ নয়, হাওরবাসীকে বাঁচাতে প্রয়োজনে কনক্রিটের বাঁধ দিতে হবে। বারংবার পাহাড়ী ঢল এসে ফসলহানী ঘটায়। আষাঢ় মাসের পরিবর্তে চৈত্র মাসে বন্যা হচ্ছে। কেন হচ্ছে হাওরের পানিতে ইউরেনিয়াম আসছে কোথা থেকে এগুলো আসলেই ভাবনার বিষয়। ভারতের সাথে তিস্তা চুক্তি করবেন ভাল কথা। কিন্তু ভারতের পানি আসা বন্ধ করার জন্য কেন দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হতে পারেনা। আলোচনার সুযোগ যদি না পান তাহলে সুনামগঞ্জের ভানবাসিকে বাঁচাতে আন্তর্জাতিক আদালতে যান। যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন হয় সরকারকে সেখানেই যেতে হবে। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে স্থানীয় সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জেলা জেএসডির সভাপতি দেওয়ান ইছকন্দর রাজা চৌধুরী সুবক্ত রাজার সভাপতিত্বে এসময় অনুষ্টিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উদ্দিন চৌধুরী সুইট, কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য চৌধুরী শাহেদ কামাল টিটু,সিলেট জেলা জেএসডি নেতা মুক্তিযোদ্ধা মহীউদ্দিন চৌধুরী ও দিরাই উপজেলা কমিটির সভাপতি কমরেড মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে আব্দুর রব বলেন, রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকবেন সমালোচনা সহ্য করবেন না, গায়ে জ্বালা ধরে যাবে তাতো হবে না। হাওরপাড়ের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করবেন না তা হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী হাওরে এসে ত্রাণ বিতরণ করে গেলেন কিন্তু হাওরবাসীর স্থায়ী সমাধানে কোন ভুমিকা রাখলেন না। শুধু হেলিকপ্টারে এসে কিছু ত্রাণ দিলেই হাওরের সমস্যার সমাধান হবে না। কালো মাইয়া যেমন তার রুপের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ঠুটে কড়া রঙের লিপিস্টিক দেন তেমনি এদেশে যে সরকারই আসুক শুধু ঢাকার সৌন্দর্য বাড়াতে কাজ করেন। কারণ পরদেশিরা যাতে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা না বুঝতে পারে। তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ টাঙ্গুয়ার হাওর প্রকৃতির প্রাণ। এটাকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীনতা পরবর্তী ৪৫ বছরেও কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এখানের মাছ রাজধানীতে বসে খাবেন, হাওরের টাকা দিয়ে ঢাকা শহরে বাড়ি-গাড়ি বানিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু হাওরবাসীর দুর্দশা লাঘবে আজো কেউ এগিয়ে আসেননি। শত শত বছর ধরে হাওরে বন্যায় ধান তলিয়ে যায়, কিন্তু কোন সময়তো মাছ-হাঁস সহ বিভিন্ন জলজপ্রাণীর মরেনি। এবার হাওরের পানিতে কেমিক্যাল আসল কোথা থেকে। অভিলম্বে ন্যাশনাল টাস্কফোর্স গঠন করে জানানো হোক হাওরের পানিতে কেমিক্যাল কোথা থেকে আসল। উল্লেখ্য, আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জের ‘বেদেপল্লী’ সোনাপুর গ্রামে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরবেন তিনি।