দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নতুন নামকরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড়
সুনামগঞ্জ :: দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নামকরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চলছে সমালোচনার ঝড়। পক্ষে বিপক্ষে চলছে তুমূল বির্তক। অনেকেই ভোটিং সিস্টেমের মাধ্যমে মতামত আদায় করছেন। কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন বাকবিতন্ডায়। স্বপক্ষে মতামত নিতে গিয়ে আক্রমনাত্মক মন্তব্যেও জড়িয়ে পড়ছেন। তবে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নাম পুনঃবহালের দাবিতেই বেশি সাড়া দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পুনঃবহালের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচীরও ডাকা দিয়েছেন উপজেলার একাংশ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনে রেজুলেনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ নাম পরিবর্তন করে শান্তিগঞ্জ নাম রাখার প্রস্তাব পাস হয়। গত ২৯ মে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সামনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ নাম পরিবর্তন করে শান্তিগঞ্জ রাখার দাবিতে মানববন্ধন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন। এরপর থেকেই মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। উপজেলার তরুণ, সুশীল সমাজের একটি বড় অংশসহ প্রবাসীরা এর বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে থাকেন। নিজের ফেইসবুক ওয়ালে উপজেলার নাম দক্ষিণ সুনামগঞ্জ রাখার পক্ষে দিচ্ছেন মতামত।
নোহান আরেফিন নেয়াওয়াজ নামে এক গণমাধ্যমকর্মী তার ওয়ালে লিখেছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ নাম যদি বহাল থাকে তাইলে আমি দোযখে যাবনা। আবার পরিবর্তন হয়ে শান্তিগঞ্জ হলেও আমি বেহেস্তেও যাবো না। তাই নাম পরিবর্তন নিয়া আমার কোন মাথা ব্যাথা নাই। তবে আমার মাথা ব্যাথা, আমার জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডি কার্ড ও পাসপোর্ট নিয়া। জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে খরচ নুন্যতম ১০০ টাকা, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন খরচ ব্যাংক চালান বাবদ ২৪৫ টাকা, পাসপোর্ট বানাতে খরচ প্রায় ৬০০০ টাকা। এখন দক্ষিণ সুনামগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে যদি শান্তিগঞ্জ হয় তাহলে, জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট কপি সবগুলোই পরিবর্তন করতে হবে। আর পরিবর্তন করতে গেলেই দৌড় ঝাপ ও আবার টাকার প্রয়োজন। দৌড় ঝাপ না হয় বিনা পয়সার কষ্ট করেই ফেললাম কিন্তু পুনরায় টাকা দিয়ে সংশোধন আমি অদমের পক্ষে আবার করতে গেলে বুকের বা পাশটা চিন চিনিয়ে ব্যাথা হবে। এই অদম না হয় একাই এই ব্যাথা সহ্য করি নিলাম কিন্তু আমার মত দক্ষিণ সুনামগঞ্জের প্রায় ৮৫ হাজার ভোটার আইডি কার্ড, প্রায় এক লাখেরো উপরে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের ব্যাথা কি সবার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব…?
শাহাদত হোসাইন কামরান নামে একজন লিখেছেন, আমাদের এই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিয়ে কতইনা আন্দলোন করেছি আমরা। কিন্তু এখন শুনছি এই দক্ষিণ সুনামগঞ্জের নাম পরিবর্তন করতে নাম পরিবর্তনের নেতারা উঠেপরে লেগেছেন, এই নাম পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জে কিছু একটা হলে এর দায়ভার আপনাদেরই নিতে হবে। মোসাদ্দেক রায়হান বাবু নামে এক প্রবাসী লিখেছেন, আমরা প্রবাসীরা কারো খাই না কারো দেওয়া কিছু পড়িও না বরং আমাদের দেওয়া অত্রে আপনাদের সরকার চলে। তাই আমাদেরকে এই বিপদের মুখে টেলে দিয়েন না। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা বহাল না থাকলে আমাদের অনেক বিপদের সম্মখিীন হতে হবে। যার দায় বার পরবর্তীতে আপনাদের নিতে হবে। আমাদের কথা চিন্তা করে এই অযোক্তিক প্রস্তবনা থেকে সরে আসুন দক্ষিণের উন্নয়নের স্বর্থে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা বহাল রাখুন। এই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিয়ে কতইনা আন্দলোন করেছি আমরা।
হোসাইন আহমদ মিশেল নামে আরেকজন লিখেছেন, ১৮ মে ২০০৮ ইং ঘোষিত হয় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা। বিগত ১১ বছর হলো আমরা আমাদের প্রিয় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নামেই তৃপ্তির সাথে পরিচয় দিয়ে আসছি। গত ১০ বছরে দক্ষিণ সুনামগাঞ্জ উপজেলা নাম টি আমাদের অনতর এর সাথে ওতপ্রতভাবে জরিয়ে গেছে এবং দক্ষিণ সুনামগাঞ্জ নামের মধ্যেই অন্তর সুখ পাই। দক্ষিণ সুনামগাঞ্জ নামেই আছি তৃপ্ত তবে কেনো নতুন করে পরিচয় বদলাবো। এমজেএইচ জামিল নামে এক সাংবাদিক লিখেছেন, আমার উপজেলার নাম দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, হ্যা এটাই বেষ্ট। কোন ব্যক্তি বা একক গ্রামের নামে উপজেলার নাম পরিবর্তন চাইনা।
ওবায়দুল হক মিলন নামে এক সমাজকর্মী লিখেছেন আমাদের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মানুষ সমস্যামুক্ত আছে। নাই রাজনৈতিক হানাহানি,নাই জনগণের সমস্যা, নাই উন্নয়ণের বাঁধা, মন্ত্রী মহোদয়,উপজেলা প্রশাসন ও জনগণের হাত ধরে যখন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা উন্নয়ণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই নাম পরিবর্তনের একটি ইস্যু এনে এ জনপদের মানুষের সমস্যা সৃষ্টির কাজ করে যাচ্ছে বাহিরের কিছু লোক। আর আমরা অনেকেই না বুঝে সেটা পরিবর্তনের জন্য কাজ শুনরু করেছি। সহমত করছি, বিষয়টি গভীর ভাবে খোঁজলে সবাই বের করতে পারবেন। আমার ধারণা নাম পরিবর্তনের বিষয়টি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এর কারো মাথায় প্রথম আসেনি কেউ/ কোন মহল বাহির থেকে বিষয়টি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এ ডুকিয়ে দিয়েছে। তার কারণ হিংসা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ জনপদ এগিয়ে যাচ্ছে। বাঁধা সৃষ্টি করার একটি হাতিয়ার হিসেবে এমন ইস্যুটি ব্যবহৃত হচ্ছে, এটা বুঝতে হবে। এ জনপদের মান্ষু ভালো আছে, তাই সমস্যা সৃষ্টি না করে।