দিরাই: ত্রাণ না পেয়ে কৃষকদের হামলায় চেয়ারম্যান-পুলিশ লাঞ্ছিত
দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণকালে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হামলায় লাঞ্ছিত হয়েছেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহানকাজী, ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য নগেন্দ্র চন্দ্র দাস, মহিলা (৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডেও সংরক্ষিত) সদস্য শেফা বেগম ও দিরাই থানার এ এসআই জরিফসহ ২ পুলিশ সদস্য। বুধবার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের দত্তগ্রাম গ্রামে ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে সরকারে বিশেষ ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফ এর চাল ও নগদ অর্থ বিতরণকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে- প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ও হতদরিদ্ররকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বাররা স্বজনপ্রীতি করে একই পরিবারে একাধিক নাম ও ধনীব্যাক্তিদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা এবং একইব্যক্তির নাম দুইবার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি থাকার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত ও হতদরিদ্র কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্মারদের উপর চড়াও হয় এবং চেয়ারম্যান মেম্বার ও পুলিশ সদস্যদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুজ্জামান পাবেল, দিরাই থানার ওসি মোস্তফা কামাল, প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল হাই খান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা গেছে, অকাল বন্যায় হাওরে দুর্যোগে ভাটিপাড়া ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০০ জনের তালিকা প্রনয়ন করে ইউনিয়ন পরিষদ। বুধবার প্রথম ধাপে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডসহ তিনটি ওয়ার্ডে ৪৫০ জনকে সরকার ঘোষিত প্রত্যেককে ৩৮ কেজি চাল ও নগদ ৫০০টাকা বিতরণ শুরু করা হয়। ৯ নং ওয়ার্ডে বিতরণ শেষ করে বিকেল ৩টার দিকে ৭ নং ওয়ার্ডে বিতরণ শুরু করে শেষ করার মুহূর্তে এই ওয়ার্ডের ধলকতুব গ্রামের তালিকায় বাদপড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার নগেন্দ্র চন্দ্র দাসের উপর চড়াও হয়ে তাকে মারধর শুরু করে। এমন সময় ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ সদস্য ও চৌকিদাররা এগিয়ে আসলে তারাও বিক্ষুব্ধ কৃষকের রোষানলে পড়ে লাঞ্ছিত হন।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহজাহানকাজী বলেন- যথাযথভাবে প্রত্যেককে ৩৮ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা বিতরণ শুরু করা হয়। ৯ নং ওয়ার্ড শেষ করে ৭ নং ওয়ার্ডে বিতরণ শুরু করে শেষের পথে কয়েকটা নাম বাকি থাকতেই উপস্থিত কয়েকজন তাদের নাম নেই কেন মেম্বারকে জিগায়, মেম্বার বলছে চেয়ারম্যানসাব ১৫০ জনের নাম দিতে বলছে,আমি দিছি, তুমরার নাম বাদ পড়লে পরে দেয়া যাবে, এসময় তারা মেম্বারকে মারধর করতে এগিয়ে আসে। পুলিশ বাধা দিতে চাইলে তাদেরকে মারধর করে, আমি এগিয়ে আসলে আমার উপরও হাত তুলে, আমার হাতে বিতরনের অবশিষ্ট টাকা ছিল, তাও ছিনিয়ে নেয় তারা। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দিরাই থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান- কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।