মৌলভীবাজারে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দুই ছাত্রলীগকর্মী নিহত হয়েছেন। শহরের সরকারি স্কুল অডিটোরিয়ামের পেছনে বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ‍পুরো শহরজুড়ে। শহরের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। চলছে নিহতদের স্বজনদের বুকফাটা আহাজারি। আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান রয়েছে অব্যাহত। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের বিলাল মিয়ার ছেলে নাহিদ আলম মাহি (১৬) এবং পুরাতন হাসপাতাল সড়কের সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে মোহাম্মদ আলী শাবাব (২২)। নিহত মাহি মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দিবা শাখার এসএসসি পরিক্ষার্থী। শাবাব সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার সরকারি স্কুলের অডিটোরিয়ামের পেছনে ও স্কুল হোস্টেলের সামনে নাহিদ আলম মাহি ও মোহাম্মদ আলী শাবাবের উপর অতর্কীতভাবে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা পালিয়ে যায়। তাদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মাহির বাবা বিলাল মিয়া জানান, তার ছেলে সরকারি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। সে প্রাইভেট পড়ার জন্য সকাল সাড়ে ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয় এবং এটাই ছিল ছেলের সঙ্গে তার শেষ দেখা। তিনি এসময় বিলাপ করে বলেন, মাহিকে নিয়ে বহু আশা ছিল তার বাবার। তিনজন টিচারের কাছে প্রাইভেট পড়াতেন। তার সব শেষ হয়ে গেছে বলে জানান তার বাবা। নিহত স্কুল ছাত্র মাহির মামা ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের সবার বড় আশা ছিল, তাকে নিয়ে। তাই প্রতিদিন প্রাইভেট পড়ার জন্য বাড়ি থেকে সকালে আসতো। সন্ধ্যয় ফিরতো। আজ সন্ধ্যার পর তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে আসি। কিন্তু কি কারণে তাকে কারা হত্যা করলো আমরা তা জানি না।’ এদিকে নিহত কলেজ ছাত্র শাবাবের মামা রাফাত চৌধুরী বলেন, শাবাব ছাত্রলীগের একজন কর্মী। কেন ঘটনাটি ঘটেছে এখনও আমরা জানি না। মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি জানান, কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তার অজানা। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহম্মদ জানান, নিহতরা ছাত্রলীগ কর্মী। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ জালাল জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে তবে বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn