সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে যাদুকাটা নদীর তীরে দুই ধর্মীয় উৎসব শুরু হবে মঙ্গলবার। যা চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এই তিনদিন ওই এলাকায় বসবে দুই ধর্মের মানুষের মিলনমেলা। তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের যাদুকাটার দুই তীরে ৬শত বছরের অধিক সময় ধরে চলে আসা এই উৎসবকে সামনে রেখে উৎসব মুখর পরিবেশ ও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। ৩ দিন ব্যাপী এ উৎসবের একটি হল-মুসলমানদের হযরত শাহ আরোফিন(রঃ)এর ওরস মোবারক অন্যটি হল- হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূন্যতীর্থ বা গঙ্গাস্নান। পূন্যতীর্থ ২৯ মার্চ হলেও এর রেশ থাকে আরো দুদিন। এই দুই উৎসবে দু’ধর্মের লাখো ভক্তের আগমনে মিলন মেলায় যাদুকাটা নদীর দুই-তীর। রাজারগাঁও ও লাউড়েরগড়ে বসে বিরাট বারুনী মেলা। মেলায় ঢল নামে সর্বস্থরের জনসাধরনের।

শাহ আরেফিন(রঃ)মোকাম পরিচালনা কমিটি ও উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আলম সাব্বির বলেন, মুসলমানদের ৩৬০আওলিয়ার মধ্যে শাহ আরোফিন(রঃ)ছিলেন অন্যতম। সবাই জানেন তিনি একজন জিন্দা পীর। মুসলমান ধর্মালম্বীরা তাদের মনোবাসনা পূরণ ও সিদ্ধি লাভের আশায় শাহ আরোফিন(রঃ)এর ওরসে যান। তিনি ভারতের মেঘালায় পাহাড়ের বড়বড় পাথরের গুহায় বসে আল্লাহর ইবাদত করতেন। ওইটাই ছিল তার একমাত্র আস্তানা। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের লাউড়েরগড় এলাকায় জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন স্থানে শাহ আরোফিন(রঃ)এর আস্তানা তৈরি করে সেখানেই ওরস পালন করে ভক্ত আশেকানরা।

তিনি আরও জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শাহ আরোফিন(রঃ)এর আস্তানার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃংখলাবাহিনীর সাথে কথা হয়েছে কোন অনিয়ম হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে তারা। আমাদের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

অদ্বৈত্য প্রভু জন্মধামের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, এখানে না আসলে জীবনের পূর্নতা আসে না। প্রতি বছরের চৈত্র মাসে এই তিথীতে গঙ্গাস্নানের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে হিন্দু ধর্মাবলাম্বীরা যাদুকাটা নদীতে ছুটে আসেন। হিন্দুধর্মালম্বীরা যাদুকাটা নদীতে গাঙ্গা স্নানের মাধ্যমে তাদের সারা বছরের পাপ মোচনসহ পুণ্য লাভের জন্য এখানে আসেন মা,বাবা, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। ১৫১৬খিষ্টাব্দে পনাতীর্থের সূচনা করেন মহাপুরুষ শ্রীমান অদ্বৈত আর্চায প্রভু। নদীর তীর সংলগ্ন রাজারগাঁও গ্রামে অদ্বৈত আর্চায মন্দির ও আখড়া তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আর জানান,এই উৎসবে দেশে-বিদেশের লক্ষ লক্ষ পূনার্থী ও আশেকানদের আগমন ও নিরাপদে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক সহযোগীতা করা হবে আমাদের পক্ষ থেকে এছাড়া প্রশাসনও আছে আমাদের সাথে।

তাহিরপুর থানার অফির্সাস ইনচার্য আব্দুল লতিফ তরফদার জানান,শাহ আরেফিন(রঃ)মোকাম ও পর্নতীর্থ এলাকায় ও আসা-যাওয়ার পথে সকল প্রকার অনিয়ম ও আইনশৃংখলা বজার রাখার জন্য সর্তক অবস্থানে আছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
 
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান কবির জানান-দু-ধর্মের দুটি মেলায় আসা লোকজনের নিরাপত্তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবং যে কোন অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn