দোয়ারাবাজারে স্বাক্ষর জাল করে সাড়ে ৮ লাখ টাকা উত্তোলন
তাজুল ইসলাম :: দোয়ারাবাজার অগ্রণী ব্যাংক শাখা থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ। দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও প্রতারকসহ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে মাঠে নেমেছে। ঘটনায় জড়িতদের একটি প্রশিক্ষিত প্রতারক দল বলে পুলিশ ধারণা করছে। পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ওই ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীও রয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ২৬ আগস্ট দুপুরে পরপর তিন চেকে সদ্য খোলা একই হিসাব থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকচক্র। কিন্তু একই দিনে তিন দফায় একই হিসাব থেকে তিনটি চেক ক্যাশ করার সময় ক্যাশিয়ারসহ ব্যাংক অফিসাররা একবারও কী গ্রাহকের হিসাব যাচাই করেন নি। কার্যত এ বিষয়টি রহস্যজনক বলে ধোরণা করছেন অভিজ্ঞ মহল।
অগ্রণী ব্যাংক দোয়ারাবাজার শাখার ব্যবস্থাপক জিয়াউল ইসলাম লিটন জানালেন, প্রতারকরা ওই শাখার আরেক অফিসার মাহতাব উদ্দিনের স্বাক্ষর ও সীল জাল করে সরাসরি ক্যাশিয়ারের কাছে চেক নিয়ে যায়। ব্যাংকে ভিড় থাকায় ক্যাশ অফিসার চেক ও হিসাব যাচাই ছাড়াই গ্রাহককে টাকা প্রদান করেন। তবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছে। দোয়ারাবাজার থানার ওসি মো. নাজির আলম জানান, অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় থানায় কোনো মামলা করা হয়নি। তবে তারা ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশ ও ডিবি পুলিশ স্ব উদ্যোগেই ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে ওই প্রতারক ও নমিনীর ভোটার আইডি অনুযায়ী সরেজমিন গিয়ে ফারুক ও আরিফ নামে দোহালিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে কোনো মানুষের হদিস মিলেনি। তাদের ভোটার আইডিও নকল। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও গাফিলতি ছিল বলে ধারণা করছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত. গত ১৬ আগস্ট মো. ফারুক মিয়া, পিতা- কাদির মোল্লা, মাতা- মেহেরজান, গ্রাম ভবানীপুর, ইউনিয়ন দোহালিয়া লিখা সম্বলিত জাতীয় পরিচয়পত্র (নম্বর- ৯০১৩৩৩২২৮৫৬২৭) দিয়ে অগ্রণী ব্যাংক দোয়ারাবাজার শাখায় একটি হিসাব খোলে এক প্রতারক। ওই হিসাবে নমিনী দেয় একই গ্রামের মো. আরিফ মিয়াকে। তার পরিচয়পত্র (নম্বর ৯০১৩৩৩২২৮৫৬৩৫) সহ কাগজপত্র জমা দেয়। তাদের সনাক্ত করেন উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের হিম্মতেরগাঁও নিবাসী বয়োজ্যেষ্ট স্কুল শিক্ষক আরব আলী। তিনি বলেন, ব্যাংকে বসা অবস্থায় কাগজ নিয়ে তার কাছে গেলে সরল বিশ্বাসে স্বাক্ষর করেন তিনি। ১৬ আগস্ট হিসাব খোলার সময় প্রতারকরা প্রাথমিক জমা দিয়েছিল ৫ হাজার টাকা। পরদিন ১৭ আগস্ট ঢাকা থেকে অনলাইনে আরও ১০ হাজার টাকা জমা হয় ওই হিসাবে। ২৪ আগস্ট ব্যাংকে এসে চেক বই উত্তোলন করে ওইদিন ১৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে। ২৬ আগস্ট বুধবার তিন দফায় তিন চেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে ওই প্রতারকচক্র।