ধর্মপাশায় অপহরণের একমাস পরেও উদ্ধার হয়নি আদিবাসী ছাত্রী
ধর্মপাশা উপজেলার ভোলাগঞ্জ সার্বজনীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির আদিবাসী ছাত্রী অপহরণের একমাস পরেও উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় ছাত্রীর পরিবার থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করায় আসামিরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। এদিকে মেয়েকে না পেয়ে চরম উৎকণ্ঠায় আছে পরিবারের লোকজন। তারা দ্রুত মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন। নিখোঁজের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়- ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানার বংশীকুন্ডা (উত্তর) ইউনিয়নের ভোলাগঞ্জ সার্বজনীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো পার্শ্ববর্তী লক্ষীপুর গ্রামের এক আদিবাসী ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো রূপনগর গ্রামের নূর নবীর পুত্র মাঈন উদ্দিন। গত ৮ জুন রাত ১০ টায় মাঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে তোলপাড় শুরু হলে ওই রাতে মধ্যনগর থানা পুলিশ আদিবাসী ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে ধর্মপাশা আদালতের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়। ওইদিন পুলিশ মাঈনুদ্দিনকেও জেল হাজতে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় ৯ জুন মধ্যনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাইনুদ্দিনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন ছাত্রীর পিতা। মামলা দায়েরের পর আসামিরা নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রীর পরিবার।
জানা গেছে, মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ১১ জুন ফের রাতে দলবল নিয়ে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় ওই ছাত্রীকে। এরপর থেকে আর কোন খবর পাচ্ছেনা পরিবার। এ ঘটনায় গত ১৩ জুন রাতে ছাত্রীর বাবা মধ্যনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সম্প্রতি আসামি পক্ষ ছাত্রীর পরিবারকে জানিয়েছেন আপোস করা হলে তাদের মেয়েকে ফেরত দেওয়া হবে। আপোসের জন্য টাকা-পয়সার লোভ দেখানো হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।স্থানীয় ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন চেয়ারম্যান আশুতোষ হাজং এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ এক মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু ওই ছাত্রীটিকে উদ্ধার করা হচ্ছেনা। আমরা আদিবাসী সমাজ এই ঘটনায় ন্যায় বিচার চাই এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. লোকমান হোসাইন বলেন, প্রথম দফা অপহরণের পর আমরা রাতেই ছাত্রীকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছি। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পুলিশ সারাদেশে বার্তা পাঠিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার অভিযান চালানোর পাশাপাশি অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।