ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন জান্নাত আরা ঝর্ণা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হাসান শ্যামলের আদালতে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনাসহ সাক্ষ্য দেন তিনি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদীর বরাতে তিনি বলেন, ‘মামুনুল ঝর্ণার স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে পরিচয়। পরে স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ হলে মামুনুল তাকে ঢাকায় একটি বাসায় রাখতেন এবং নানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন।’ রকিবুদ্দিন আরও বলেন, ‘মামুনুল কোথায়, কখন নিয়ে ধর্ষণ করেছেন তা আদালতকে জানিয়েছেন ঝর্ণা। বিয়ের প্রলোভনে রয়্যাল রিসোর্ট ছাড়াও অন্যান্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে তিনি এ কাজ করেছেন। তবে মামুনুল বারবার দাবি করেছেন ঝর্ণাকে তিনি বিয়ে করেছেন।’
ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য বুধবার সকাল ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। এরপরই আদালতে উপস্থিত হন ঝর্ণা। আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সাক্ষ্য দেয়া শেষে মামুনুলকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামুনুল হকের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেসবাহর অভিযোগ, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে আগমন নিয়ে কথা বলায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলা হয়েছে।’
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণার সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন মামুনুল। শুরুতে তিনি ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করলেও পরে জানা যায়, ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এরপর ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় মামুনুলের নামে ধর্ষণ মামলা করেন ঝর্ণা। এতে তিনি অভিযোগ করেন, মামুনুল বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন। বিয়ে করবেন বলে আর করেননি।
এই মামলার আগেই ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি দল। এরপর সহিংসতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়। ঝর্ণার মামলার পর তাকে এই মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গত ৩ নভেম্বর ধর্ষণ মামলায় মামুনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৫৮ বার