ধেয়ে আসছে বজ্রপাত
সুখেন্দু সেন(ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)-
কোন এক সময় বাংলাদেশ নামক আমাদের এই দেশটি দূর্নীতিতে শীর্ষস্থান অধিকার করেছিল,তাও পরপর পাঁচবছর।এ শীর্ষ শিরোপাটি ছিল আমাদের জন্য লজ্বা,অপমানের। অবস্থার তেমন উন্নতি না হলেও বর্তমানে আমরা শীর্ষস্থানের শিরোপা হারিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্থি পেয়েছি। সাম্প্রতিক এক জরিপে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ন দেশ হিসাবে ৮ম স্থানে অবস্থান করছে। আমাদের চেয়েও আরো বেশী অশান্তিতে রয়েছে আরো ১৩২টি দেশের মানুষ। এতে কিছু আত্মতৃপ্তির অবকাশ হয়তো আছে। জরিপের মাপকাটি কী,ভিত্তি কী এমন প্রশ্ন না তুলেই ধরে নিতে পারি এ অবস্থান অর্জনের ক্ষেত্রে দেশের অধিকাংশ মানুষ যে শান্তিপ্রিয় তা’ই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
তবে আরেকটি ভয়ংকর শীর্ষস্থান আমাদের জন্য আতংক আর দুর্যোগ নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। সেটি বজ্রপাত। নাসা এবং মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনায় উঠে এসেছে বিশ্বের শীর্ষ বজ্রপাত প্রবন এলাকা সুনামগঞ্জ। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী বজ্রপাত হয়েছে সুনামগঞ্জে। হাওর এলাকা যেখানে গাছগাছালি কম সেখানেই এর প্রকোপ বেশী। এর মধ্যেই বজ্রপাতে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। অকাল বানে ফসল হারা মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি বজ্রপাতও আরেকটি অবধারিত আতংক হয়ে ধেয়ে আসছে।
প্রকৃতি ভারসাম্য হারিয়েছে। বনভূমি উজার,বৃক্ষ নিধন বজ্রপাতের প্রকোপ বৃদ্ধির অন্যতম কারন। বৃক্ষরোপন,বনায়নের বিকল্প নেই। সরকার বিগত বছর থেকেই বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসাবে গন্য করে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন।তবে প্রধান প্রতিরোধক বৃক্ষরোপন কর্মসূচির তেমন অগ্রগতি হয়নি। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে বজ্রাহতের চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা রয়েছে কিনা সে বিষয়ে তেমন তথ্য জানা নেই। বৃটিশ আমলে তৈরী অফিস আদালতে বজ্রপাত নিরোধ লৌহশলাকা এখনও দৃশ্যমান। কিন্তু বজ্রাতংক বেড়ে গেলেও এখনকার সময়ে নির্মিত ভবন সমূহে এরকম কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা চোখে পড়েনা। সম্ভাব্য এবং অবধারিত এই দুর্যোগকে সচেতনার সাথে মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন জরুরী।